বল্লাম—ভেবে দেখুন জানকীবাবু, আপনার কাছে কত পবিত্র স্মৃতির আধার হওয়া উচিত যে গ্রাম, সেই গ্রামে বসে আপনি নরহত্যা করেচেন—এ যে কত পাপের কাজ তা যদি আজও বোঝেন, তবুও অনুতাপের আগুনে হৃদয় শুদ্ধ হয়ে যেতে পারে। অনুতাপে মানুষকে নিষ্পাপ করে, মহাপুরুষেরা বলেচেন। আপনি বিশ্বাস করুন বা না-ই করুন, মহাপুরুষদের বাণী তা ব'লে মিথ্যা হয়ে যাবে না।
জানকীবাৰু আমার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে চেয়ে বল্লেন—মশায়, আপনি কি কাজ করেন? এই কি আপনার পেশা?
—খারাপ পেশা নয় তা স্বীকার করবেন বোধহয়!
—খারাপ আর কি?
—দোষীকে প্রায়শ্চিত্ত করবার সুবিধে ক’রে দিই, যাতে তার পরকালে ভালো হয়।
—আচ্ছা, এ আপনি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন?
—নিশ্চয়ই করি।
—তবে শুনুন বলি, বসুন।
—বেশ কথা, বলুন।
—আমার দ্বারাই এ-কাজ হয়েচে।
—অর্থাৎ গাঙ্গুলিমশায়কে আপনি...
—ও-কথা আর বলবেন না।
—বেশ। কেন করলেন?
—সে অনেক কথা। আমার উপায় ছিল না।
—কেন?
—আমি ব্যবসা করতুম শুনেচেন তো? ব্যবসা ফেল প’ড়ে কপর্দ্দকশূন্য হয়ে পড়েছিলাম, চারিদিকে দেনা। লোভ সামলাতে পারলাম না।
—আপনার সান্ত্বনা আপনার কাছে। কিন্তু এটা লাগ্সই কৈফিয়ৎ হোলো না।
—আমি তা জানি। দুর্ব্বল মন আমাদের—কিন্তু আপনাকে একটা কথা জিগ্যেস করতে বড় ইচ্ছে হয়।
—স্বচ্ছন্দে বলুন।
—আপনি ওই কবচখানা পেয়েছিলেন যেদিন, সেদিন আপনি বুঝতে পেরেছিলেন ওখানা কি?
—না!
—কবে পারলেন?
—আমার শিক্ষাগুরু মিঃ সোমের কাছে কবচের বিষয় সব জেনেছিলাম। আপনাকে একটা কথা জিগ্যেস করবো?
—বলুন!