&>bア বিভূতি-রচনাবলী গোপাল বললে, “কি মজা । না দাদা ?” “চুপ করে থাক,—তোর বুদ্ধি-শুদ্ধি নেই ; তালনবমীর বের্তোয় তালের বড় করে, তুই জানিস্ ?” & গোপাল সেটা জানতো না । কিন্তু দাদার মুখে শুনে খুব খুশী হয়ে উঠলো। সত্যিই তা যদি হয়, তবে সে স্বখাপ্ত খাবার সম্ভাবনা বহুদূরবর্তী নয়, ঘনিয়ে এসেচে কাছে। আজ কি বার সে জানে না, সামনের মঙ্গলবারে । নিশ্চয় তার আর বেশি দেরি নেই। দাদার সঙ্গে বাড়ী যাবার পথে পড়ে জটি পিসীমার বাড়ী। নেপাল বললে, “তুই দাড়, ওদের বাড়ী ঢুকে দেখে আসি। ওদের বাড়ী তালের দরকার হবে, যদি তাল কেনে।”. এ গ্রামের মধ্যে তালের গাছ নেই। মাঠে প্রকাও তালদীঘি, নেপাল সেখান থেকে তাল কুড়িয়ে এনে গায়ে বিক্রি করে । জটি পিঙ্গীমা সামনেই দাড়িয়ে। তিনি গ্রামের নটবর মুখুজ্যের স্ত্রী, ভালো নাম হরিমতী ; গ্রামমৃদ্ধ ছেলে-মেয়ে তাকে তাকে জটি পিসীমা । পিসীমা বললেন, “কি রে?” “তাল নেবেন পিসীমা ?”
- হঁ্যা, নেব বই কি । আমাদের তো দরকার হবে মঙ্গলবার ।”
ঠিক এই সময় দাদার পিছু পিছু গোপালও এসে দাড়িয়েচে । জটি পিলীমা বললেন, “পেছনে কে রে ? গোপাল ? তা সঙ্ক্যেবেলা দুই ভায়ে গিয়েছিলি কোথায় ?” নেপাল সলজমুখে বললে, “মাছ ধরতে।” “পেলি ?” “ওই দুটো পুটি আর একটা ছোট বেলে...তাহলে যাই পিসীমা ?” “আচ্ছ, এসোগে বাবা, সক্ষ্যে হয়ে গেল ; অন্ধকারে চলাফেরা করা ভালো নয় বর্ষাকালে ।” জটি পিসীমা তাল সম্বন্ধে আর কোনো আগ্রহ দেখালেন না বা তালনবমীর ব্রত উপলক্ষে তাদের নিমন্ত্রণ করার উল্লেখও করলেন না,—যদিও দু'জনেরই আশা ছিল হয়তো জটি পিসীমা তাদের দেখলেই নিমন্ত্রণ করবেন এখন । দরজার কাছে গিয়ে নেপাল আবার পেছন ফিরে জিগ্যেস করলে, “তাল নেবেন তা হ’লে ?” "তাল ? তা দিয়ে বেও বাবা। ক'টা করে পয়সায় ?” “দুটো করে দিচ্ছি পিসীমা। তা নেবেন আপনি, তিনটে করেই নেবেন।”
- বেশ কালে হেঁড়ে তাল তো। আমাদের তালের পিঠে হবে তালনবমীর দিন—ভালো তাল চাই।”
- মিশকালো তাল পাবেন। দেখে নেবেন আপনি ।”
গোপাল বাইরে এসেই দাদাকে বললে, “কবে তাল দিবি দাদা ?”
- কাল *