૨૨ જ বিভূতি-রচনাবলী
- মঙ্গলবারে তালনবমী, না মা ?”
“ত হয়তো হবে। কি জানি বাপু ! নিজের ছাড়িতে চাল জোটে না, তালনবমীর খোজে কি দরকার আমার ?” g সারাদিন কেটে গেল। নেপাল বিকেলের দিকে জিগ্যেস করলে, “জটি পিলীমার বাড়ীতে তাল দিইছিলি আজ সকালে ? কোথায় পেলি তুই ? আমি তাল দিতে গেলে পিলী বললেন, 'গোপাল তাল দিয়ে গেচে, পয়সা নেয় নি।”—কেন দিতে গেলি তুই ? একটা পয়সা হ’লে ভূজনে মুড়ি কিনে খেতাম !”
- ওরা নেমস্তন্ন করবে, দেখিল দাদা, কাল তো তালনবমী!”
“সে এমনিই নেমস্তন্ন করবে, পয়সা নিলেও করবে। তুই একটা বোকা ।”
- আচ্ছা দাদা, কাল তো মঙ্গলবার না ?”
“ह ।” রাত্রে উত্তেজনায় গোপালের ঘুম হয় না। বাড়ীর পাশের বড় বকুল গাছটায় জোনাকিয় ঝণক জলচে ; জানলা দিয়ে সেদিকে চেয়ে চেয়ে সে ভাবে- কাল সকালটা হ’লে হয় । কতক্ষণে খে রাত পোহাবে! ••• জটি পিসীমা আদর করে ওকে বললেন খাওয়ানোর সময়, “খোক, কাকুড়ের ডালনা আর নিবি । মূগের ডাল বেশি করে মেখে নে।” জটি পিসীমার বড় মেয়ে লাবণ্য-দি একখানা থালায় গরম-গরম তিল-পিটুলি ভাজা এনে ওর সামনে ধরে হেসে বললে, “খোক, ক’খানা নিবি তিল-পিটুলি ?”—বলেই লাবণ্য-দি থালাখানা উপুড় করে তার পাতে ঢেলে দিলে। তার পর জটি পিসীমা আনলেন পায়েস আর তালের বড়া । হেসে বললেন “খোকা ঘাই তাল কুড়িয়ে দিয়েছিলি, তাই পায়েল হ’ল !•••খ, খ,—খুব খা—আজ যে তালনবমী রে ”—কত কি চমৎকার ধরনের রাধা তরকারির গন্ধ—বাতাসে । খেজুর গুড়ের পায়েসের স্বগন্ধ—বাতাসে । গোপালের মন খুশি ও আনন্দে ভরে উঠলো। সে বসে বসে থাচ্ছে, কেবলই খাচ্ছে! --সবারই খাওয়া শেষ, ও তবুও খেয়েই যাচ্ছে লাবণ্য-দি হেসে হেসে বলছে, “জার নিৰি তিল-পিটুলি ?”
- ও গোপাল ?”
হঠাৎ গোপাল চোখ চেয়ে দেখলে—জানলার পাশে বর্ধার জলে ভেজা ঝোপ-ঝাড়, তাদের সেই আতা গাছট.সে ভয়ে আছে তাদের বাড়ীতে। মার হাতের মূছ ঠেলায় ঘুম ভেঙেচে, মা পাশে দাড়িয়ে বলচেন, “ওঠ ওঠ বেলা হয়েচে কত ! মেঘ করে আছে তাই বোঝা স্বাচ্ছে না ।" বোকার মত ফ্যালফ্যাল করে সে মায়ের মুখের দিকে চেয়ে রইলো।
- আজ কি বার, মা-•• ?"
- भङ्गलबांद्र ॥*