তাঙ্গনবমী २२१ জিনিসের গুদাম এই চোয়কুঠুরিতে রঙ্কিণী দেবীর হাতের খাড়াখানা তাহারাই রাখিয়াছিল হয়তো।•••মড়কের আগে বিগ্রহের খাড়া রক্তমাখা হওয়ার প্রবাদ ! আমার মাথা ঘুরিয়া উঠিল। মডক কোথায় ভাবিতে পারিতাম যদি সময় পাইতাম সন্দেহ করিবার। কিন্তু তাহ পাষ্ট নাই। পরদিন সন্ধ্যার সময় চেরো গ্রামে প্রথম কলের রোগীর খবর পাওয়া গেল। তিন দিনের মধ্যে রোগ ছড়াইয়া মড়ক দেখা দিল—প্রথমে চেরো, তারপর পাশের গ্রাম কাজরা, ক্রমে জয়চণ্ডীতলা পৰ্য্যস্ত মড়ক বিস্তৃত হইল। লোক মরিয়া ধূলধাবাড় হইতে লাগিল। চেরো গ্রামের মাদ্রাজী বংশ প্রায় কাবার হুইবার যোগাড় হুইল । মড়কের জন্য স্কুল বন্ধ হইয়া গেল। আমি দেশে পলাইয়া আসিলাম ; তারপর আর কখনো চেরোতে ঘাই নাই—গ্রীষ্মের বন্ধের পূৰ্ব্বে’ই দেশের স্কুলের চাকুরীট পাইয়াছিলাম। সেই হইতে রক্ষিণী দেবীকে মনে মনে ভক্তি করি! তিনি অমঙ্গলের পূৰ্ব্বাভাস দিয়া সকলকে সতর্ক করিয়া দেন মাত্র। মূৰ্খ জনসাধারণ র্তাহাকেই অমঙ্গলের কারণ ভাবিয়া ভুল বোঝে । - 6भdउठढ्न কয়েক বছর পূর্বে এ ঘটনা ঘটেচে, তাই এখন মাঝে মাঝে আমার মনে হয় ব্যাপারটা আগাগোড়া মিথ্যে ; আমারই কোন প্রকার শারীরিক অস্থস্থতার দরুন হয়তো চোখে ভুল দেখে থাকবো বা ওই রকম কিছু।–কিন্তু আমার মন বলে, তা নয়, ঘটনাটা মিথ্যে ও অবাস্তব বলে উড়িয়ে দেওয়ার কোনো কারণ ঘটে নি। আমার তখনকারের অভিজ্ঞতাই সত্যি, এখন যা ভাবচি, তাই মিথ্যে । ঘটনাটি খুলে বলা দরকার। প্রসঙ্গক্রমে গোড়াতেই বলে রাখি যে, গত দশ বৎসরের মধ্যে আমার শরীরে কোনো রোগবালাই নেই। আমার মন বা মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ স্বস্থ আছে এবং যে সময়ের কথা বলচি, এখন থেকে বছর চারেক আগে, তখনও সম্পূর্ণ স্বস্ব ছিল। আমার স্কুলমাস্টারের জীবনে অত্যাশ্চৰ্য্য বা অবিশ্বাস্ত ধরণের কখনও কিছু দেখি নি। অন্য পাঁচজন স্কুলমাস্টারের মতোই অত্যস্ত সাধারণ ও একঘেয়ে রুটিন বাধা কৰ্ত্তব্যের মধ্যে দিয়েই দিন কাটিয়ে চলেছি আজ বহু বৎসর । সে বছর বর্ষাকালে, গরমের ছুটির কিছু পরে একদিন ক্লাসে পড়াচ্ছি, এমন সময় একটি ছেলে আর একটি ছেলের সঙ্গে হাত-কাড়াকড়ি করে কি একটা কেড়ে বা ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করচে, আমার চোখে পড়লো। আমি ওদের দু’জনকে অমনোযোগিতার জন্তে ধমক দিতে, অল্প একটি ছেলে বলে উঠলে, “স্তার, কামিখ্যে স্বধীরের মেডেল কেড়ে নিচ্ছে**
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/২৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।