২৩৮ বিভূতি-রচনাবলী যতীন বললে, “কি খবর ভায়া—সুবিধে করতে পেরেছ তো ?” হাজারি খুব ব্যস্তসমস্ত ভাবে বললে, “পরে বলবো। কাজ হাসিল। এখন কত বতা গুনলে বলো দেখি ?” g
- একশো বস্তা গোনা হয়ে গেছে।” বাস্তবিক, উচু উচু গাদা-করা মসলার বস্তাগুলোর দিকে চেয়ে হাজারির চোখ জুড়িয়ে গেল। সে যে দিকেই তাকায়, দেখে যে অগুনতি বস্ত সারবন্দী থামের মতো রাস্ত জুড়ে দাড়িয়ে আছে । উঃ, এমন দাও জীবনে কারো ভাগ্যে একবার বই দুবার আসে না ! এখন মসলাপোস্তায় কোনরকমে তার গুদোমে এগুলো চালান দিতে পারলে হাফ
८छ्.ए; दैf८5 । t “আর দেরি নয়”-হাজারি যতীনকে তাড়া দিয়ে ডেকে বললে, "ওহে ভায়া, শুভ কাজে আর বিলম্ব কেন ? এখন লরী ডেকে তাড়াতাড়ি মাল বোঝাই করে পোস্তায় চালনি দিয়ে দাও । আমি ততক্ষণ এগিয়ে যাই ।” একেবারে সব মাল লরীতে ধরলে না। দ্বিতীয় ক্ষেপ বস্তা চাপিয়ে যতীন যখন পোস্তায় ফিরে গেল তখনও বিকেল আছে। সে এসে দেখে, সবই অব্যবস্থা। রাশীকৃত বস্তার গাদ হাজারির দোকানের সামনে ফুটপাতে গড়াগড়ি খাচ্ছে । মাত্র তিনটি লোক এতগুলো মাল তোলবার জন্তে লাগানো হয়েচে । চতুৰ্দ্দিকে লোকের মহা ভিড়—হৈ হৈ ব্যাপার! এদিকে পুলিস তাড়া দিচ্ছে—“জলদি মাল হঠাও!” হাজারি কেবল চেঁচাচ্ছে। সে যেন কিছুই গোছগাছ করে উঠতে পারছে না । কাগুকারখানা দেখে যতীন নিজেই কোমর বেঁধে লেগে গেল। প্রাণাস্ত পরিশ্রমের পর সন্ধ্যার পূর্বেই সব মাল তোলা হয়ে গেল। বস্তাগুলি পাশাপাশি সাজিয়ে দেখা গেল ঘরে আর কুলোয় না। তখন বস্তার ওপর বস্ত চাপিয়ে দিয়ে কড়িকাঠ পর্য্যন্ত মাল ঠাসা হ’ল । গম্বুজের মতো এক একটা ফুলো ফুলো বস্তা, আর বস্তাগুলো উচুও কি কম! এই ভাবে বস্ত ভরাট করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, যতীন আর হাজারি যখন বাড়ী ফিরলো তখন রাত দশটা। সে রাত্রে গুদামে তালা লাগিয়ে দিয়ে প্রতিদিনের মতো হাজারির চাকর বাইরে ওয়ে রইলো। শেষ রাত্রে মসলার গুদোমে কি একটা শব্দ শুনতে পেয়ে আশে-পাশে দোকানদারদের ঘুম ভেঙে গেল। তার চোরের আশঙ্কা করে চাকরটাকে ডেকে তুললে। চাকরটা শশব্যস্ত হয়ে আলো জেলে বেশ পরখ করে এদিক-ওদিক দেখতে লাগলো। কিন্তু চোর ঘরে ঢুকলো কি করে ? ওদোমের দরজার তালা বন্ধ স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে। খানিক বাদে আবার ঘুম ঘুম শব ! সকলে কান খাড়া করে রইলো। বেশ মনে হ’ল এবারকার শব্দটা যেন হাজারির মসলার গুদোমের ভেতর থেকেই আসচে। অথচ ঘরের দোর-জানলা বন্ধ, বাইরে থেকে মোটা তালা দেওয়া। কি আশ্চৰ্য্য, চোর ভেতরে যাবেই বা কি করে ? অার চোরটোর যদি না এলো তবে শৰাও বা করে কে ? মাঝে মাঝে মনে হ’তে লাগলো, ঘরের ভেতর থেকে