তালনবমী ২৬৩ একটা দেশী ভড় কাছে কোথায় বাধা ছিল, তার মাঝিরা এসে গঙ্গাধরকে অচেতন অবস্থায় তাদের ভড়ে নিয়ে যায়। তারাই তাকে দোকানে পৌছে দেয়। গঙ্গাধরের টাকা ঠিক ছিল, কানাকড়িও খোয়া যায় নি। তবে শরীর শুধরে উঠতে সময় নিয়েছিল, অনেকদিন পৰ্য্যস্ত অন্ধকারে সে এক কিছুতেই থাকতে পারতে না। মাস দুই পরে মেটেবুরুজে খোদাদাদ খাঁর কাছে টাকা শোধ দিতে গিয়ে গঙ্গাধর টাকা নিয়ে যাবার দিন কি ঘটনা ঘটেছিল সেটা বললে । খোদাদাদ খা গল্প শুনে গম্ভীর হয়ে গেল । - খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বললে, “সাহ জী, ও হ’ল আমীর খা। চোরাই কোকেনের খুব বড় ব্যবসাদার ছিল। আজ বছর পনেরো আগেকার কথা, রমজান মাসে বেশ কিছু মাল হাতে পায় ৷ তক্তাঘাটের কাছে একখানা জাহাজ ভিড়েছিল, সেখান থেকে রাতারাতি সরিয়ে ফেলে, জাহাজের লোকের সঙ্গে ষড় ছিল কোথায় সে মলি রাখতে কেউ জানে না। সেই মাসের মাঝামাঝি সে খুন হয়। কে বা কেন খুন করলে জানা যায় নি, কেউ ধরা পড়ে নি। তবে দলের লোকই তাকে খুন করেছিল এটা বোঝা কঠিন নয়। এই পৰ্য্যন্ত আমীর খার ঘটনা আমি জানি । আমার মনে হয় আমীর খ৷ সেই থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার মাল বিক্রি করবার জন্তে, ওর পুরোনো কোকেনের বাক্স হয়েছে দোজখের বোঝ।”তা বাৰু, সে গুদামঘরটা কোথায় তুমি দেখাতে পারবে ?” গঙ্গাধর অন্ধকারে কোথা দিয়ে কোথা দিয়ে সেখানে গিয়েছিল তা তার মনে নেই, মনে থাকলেও সে যেতে না । পথে আসতে আসতে গঙ্গাধরের মনে পড়লো, পুরোনো ভাঙা গুদামঘরটার অস্পষ্ট অন্ধকারের মধ্যে আমীর খায়ের মুখের সেই হতাশ ও অমান্থধিক চেষ্টা করেও হেরে যাবার দৃষ্টিট। হতভাগ্য এতদিনেও কি বোঝে নি সে মারা গিয়েচে ?”কে উত্তর দেবে । ভগবান তার আত্মাকে শাস্তি দিন । রাজপুত্র কাঞ্চীর রাজপুত্র এবার যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত হবেন । রাজ্যময় ধুমধাম পড়ে গেছে। কাঞ্চীর উত্তর প্রাস্তে গরুড়ধ্বজ বিষ্ণুমন্দির । পুরোহিত গেছেন সেখানকার আশীৰ্ব্বাদী নিৰ্ম্মাল্য আনতে, লোক পাঠান হয়েচে প্রয়াগতীর্থ থেকে জল আনবার জন্যে। সেই জলে স্নান করিয়ে বিষ্ণুর পূজা-নির্খাল্য তার কপালে ঠেকিয়ে রাজপুত্রকে পুরনারীরা বরণ করবেন। রাজা বিশ্রাম কক্ষে প্রবেশ করেচেন। রাত্রি প্রায় দ্বিপ্রহর । কোশলরাজের দৃত কি এক প্রস্তাব নিয়ে এসেচে, রাজা তাই আজ সারাদিন ধরে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করছিলেন
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/২৭৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।