পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হীরামানিক জ্বলে ఇవిరి মিলিয়ে এমনভাবে সে গল্প বলে গেল—যা অবিশ্বাস করা শক্ত । স্বশীল ওকে শেষের দিকে যে প্রশ্নটা করেছিল, অর্থাৎ কতদিন আগে বুড়ীর সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়েছিল, সেটা শুধু সময় সম্বন্ধে তাকে জেরা করা মাত্র । স্বশীল বাড়ী গিয়ে সনৎকে বললে—এই কলকাতা শহরেই অনেক মজা ঘটে ধায় দেখছি । সনৎ বললে—কী দাদা ? —সে একটা অদ্ভূত গল্প। যদি বলবার দরকার বুঝি তবে বলব— পরদিন গড়ের মাঠে আবার সে নিদিষ্ট জায়গাটিতে বসে রইল। একটু পরে জামাতুল্লা খালাসী এসে ওর পাশে নিঃশব্দে বসে পড়ল। বললে—আমার কথা ভাবলেন বাবুজী ? —চল আমার সঙ্গে । একটা ছাচ তোমাকে করিয়ে দিই। এনেছ ওটা ? —ই বাবজী । দেখুন, আমি ভিক্ষে করে খাচ্ছি আজ ছু-মাস, তবুও এত বড দামী পাথরটা বিক্রি করি নি শুধু বড় একটা লাভের আশায়। কিন্তু যত দিন যাচ্চে, তত আমার মনে হচ্চে নসিব আমার খারাপ, নইলে সেই জায়গায় গিয়েও তো কিছু করতে— —জামাতুল্লা, তুমি লেখাপড়া-জানা লোক না হলেও খুব বুদ্ধি আছে। একা তুমি কিছু করতে পারবে না তা বেশ বোঝ । এ কাজে টাকা চাই, লোক চাই, জাহাজ চাই । অনেক টাকার খেলা সে সব । তোমার অত টাকা নেই। মিছে কেন নটরাজনের স্ত্রীর পাওনা জিনিস থেকে তাকে বঞ্চিত করবে ? দু-একদিনের মধ্যে প্যারিস প্লাস্টারের দ্বাচটা হয়ে গেল। স্বশীল প্রাচীন ধনী বংশের সস্তান, ওর যে ছাচ গড়িয়ে দিলে, সে ভাবলে ওদের পূর্বপুরুষের সম্পত্তি এটা ! ফেরত দেওয়ার সময় সে বললে—এটা আমার এক বন্ধুকে একবার দেখতে দেবে ? —কেন বল তো ? 隱 —আমার সে বন্ধু মিউজিয়মে কাজ করে। পণ্ডিত লোক। যদি গভৰ্মেন্টের তরফ থেকে এটা কিনে নেওয়া হয় তাই বলছি । —তাকে তোমার স্টুডিওতে কাল নিয়ে এসো। পরদিন জামাতুল্লাকে নিয়ে স্বশীল বন্ধুর স্টুডিওতে গিয়ে দেখলে একটি সৌম্যদর্শন তন্ত্রলোক সেখানে বসে আছেন । - বন্ধুটি বলে উঠল—এই ষে এস স্বশীল, ইনি এসে অনেকক্ষণ বসে আছেন—আলাপ করিয়ে দিই—ডাঃ রজনীকান্ত বস্থ এম. এ. পি. এইচ. ডি.—মিউজিয়মে সম্প্রতি চাকুরিতে ঢুকেছেন। কিছুক্ষণ পরে ডা: বস্থ পদ্মরাগের সীলমোহরের ওপর ঝুঁকে পড়ে ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে পরীক্ষা করতে করতে বিস্ময়ে প্রায় চিৎকার করে উঠে বললেন—এ জিনিসটা আপনি পেলেন কোথায় ?