পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হীরামানিক জ্বলে \ס( e \ס —লোক নয় কী রকম ? ভয়ানক লোক, আমরা বুঝেছি। ও দরকার মনে করলে তোমার মত পুরোনো বন্ধুর গলা কাটতে এতটুকু দ্বিধা করবে না। —বাবুজি দেখছি ভয় পেয়ে গিয়েছেন। —ত একটু পেতে হয়েছে। টাকাটা ও মেরে দেবে না তো ? তুমি হুঁশিয়ার হয়ে থাকবে ওর পেছনে । —বাবুজি আমি হাজার পেছনে থেকেও কিছু করতে পারব না—ও যদি ইচ্ছে করে তবে সিঙ্গাপুর থেকে আজই পালিয়ে যেতে পারে—কেউ পাত্তাই পাবে না। ইয়ার হোসেন ছাচটার কথা জিগ্যেস করছিল— —তুমি কী বললে ? —বললাম, বাবুর কাছে আছে । —মতলব কী ? —ন বাৰু খারাপ কিছু নয়—ও একবার দেখতে চায়। —ওঃ, ভাগ্যিস আসল পদ্মরাগখানা ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে এসেছিলাম কলকাতায় ! নইলে, সেই পাথর নিয়ে কলকাতাতেই খুন হয়ে গেল মেটেবুরুজে, এখানে আনলে সে পাথর আমরা হাতে রাখতে পারতাম না ! জামাতুল্লা গলার স্বর নিচু করে বললে—বাবুজি, এখানেও লোক পেছন নিয়েছে। স্বশীল ও সনৎ একযোগে সবিস্ময়ে বলে উঠল—কী রকম ! —এখন বলব না, আপনারা ভয় পেয়ে যাবেন । সিঙ্গাপুর ভয়ানক জায়গা—এখানে দিন দুপুরে মানুষের বুকে ছুরি বসায়—পরে শুনবেন। সিঙ্গাপুরে ষেদিকে বড় ডক তৈরি হয়েছে, ওর কাছে অনেক দূর পর্যন্ত সামরিক ঘাটি। সাধারণ লোককে সে সব রাস্ত দিয়ে যেতে দেওয়া হয় না। জামাতুল্লাকে পথ-প্রদর্শকরূপে নিয়ে দু'জনে সেই দিকে বেড়াতে বেরুল । সমূদ্রের নীল দিগন্ত-প্রসারী রূপ এখান থেকে যেমন দেখায়, এমন আর কোথাও থেকে নয়। দুপুরের কাছাকাছি সময়টা প্রখর রৌদ্র-কিরণে সমূদ্রজল ইস্পাতের ছুরির মত ঝকৃঝক করছে। দু-খানা মানোয়ারী জাহাজ বন্দর থেকে দূরে দাড়িয়ে ধোয়া ছাড়ছে। একজন চীনেম্যান এসে ওদের পিজিন ইংলিশে বললে—টী, স্তর, টী ? —নো টী। —নো টী স্তর ? মাই হাউস হিয়ার স্তর, ভেরি গুড হোম-মেড টী স্তর। সনৎ বললে—চল দাদা, চল জামাতুল্লা, একটু চা খেয়ে আলি। সবাই মিলে রাস্তা থেকে একটু দূরে একটা চীনা বঁাশ-বাড়ের আড়ালে একটা অ্যাসবেস্টলএর ঢেউ-খেলানো পাত দিয়ে ছাওয়া ছোট বাড়ীতে এল। বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, বাঁশের টেবিল পাতা আছে বারান্দায়। তিনজনে সেখানে বলে দূরে সমূত্রের দৃপ্ত দেখছে—এমন সময় চীনেম্যানটি চা নিয়ে এল। ওরা চা খাচ্ছে, সে লোকটা আবার কিছু কেক নিয়ে এসে ওদের