হীরামানিক জ্বলে Woe a —এসব অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ডাচ, স্টীমারে উঠতে দেবে ? মেশিন গান কিনেছেন নাকি ? —সব ঠিক আছে। আপনি শুধু দেখুন ইয়ার হোসেন কী করতে পারে। আরও এক ঘণ্টা কেটে গেল। জামাতুল্লা আর ফেরে না। স্বশীল ও সনৎ উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়ল। কাল বিকেলের সেই চীনাম্যানের কথা বার বার মনে পড়ছিল ওদের । কথাটা ইয়ার হোসেনকে বলা ঠিক হবে না হয়ত-ভেবেই ওরা বললে না। কিন্তু জামাতুল্লা সব জেনেশুনে একা বেরুল কোথায় ? বেল প্রায় দশটা। এমন সময় জামাতুল্লা ঘৰ্ম্মাক্ত কলেবরে এসে হাজির হল। ওর মুখের চেহারা দেখে তিনজনেই একসঙ্গে বললে—কী হল তোমার ? জামাতুল্লা ক্ষীণ হাসি হেসে বললে—কিছুই না। —কিন্তু তোমার চেহারা দেখে— —এই রোদে– স্বশীল বললে—জামাতুল্লা, মি: হোসেন আরো দুশো টাকা চান। —ও ! তা দিন বাবু। এই নিন চাবি ৷ —উনি বলছেন আজ রাত্রে আমাদের রওনা হতে হবে। জামাতুল্লা সে কথার কোন উত্তর না দিয়ে বললে—টাকাটা দিয়ে দিন ওঁকে আগে । টাকা নিয়ে ইয়ার হোসেন বিদায় নেবার পর-মুহূর্তেই জামাতুল্লা নিমন্বরে বললে-বড় বেঁচে গিয়েছি। ডকের পাশে যে গলি আছে ওখানে দু-জন মালয় গুগু আমাকে আক্রমণ করেছিল। দুজন দুদিক থেকে কিরীচ হাতে। তুড়ি ফাসিয়ে দিত আর-একটু হলে । আমি প্রাণপণে ছুটে বেঁচেছি। তোমরা অত ছুটতে পারতে না, মারা পড়তে ওদের হাতে । কালকের সেই চীনেম্যানের কথাই ঠিক। আমরা খুব বিপন্ন এখানে। বাড়ী থেকে কোথাও বেরিও না। ইয়ার হোসেনকে কিছু বোলো না । সনৎ ও স্বশীল রুদ্ধনিশ্বাসে ওর কথা শুনছিল। কথা শেষ হলে সনৎ তাকে চা ও টেস্ট খেতে দিয়ে বললে—কিছু বলি নি আমরা । ও আজই যেতে বলছে—শুনেছ তো ? —যাতে হয় আজই আমাদের পালাতে হবে । এখন প্রাণ নিয়ে জাহাজে উঠতে পারলে বাচি। —বল কী জামাতুল্লা ? এত ভয় নেই। চীনেম্যানটার বাজে গল্পটা দেখছি তোমার মনে বড় দাগ কেটে দিয়েছে। —বাবুজি, মেটেবুরুজের মাঠে খুনের কথাটা ভেবে দেখুন। সে পাথরখানার জন্তে নয়— অঁাকজোকের জন্যে। এখন আমার তাই মনে হচ্ছে । অসাবধান হবেন না আজ দিনমানটা । জাহাজে উঠলে কতকটা বিপদ কাটে বটে । সেদিন বিকেলে ইয়ার হোসেনের লোক আবার এল। একটা সীলমোহর-করা চিঠি সুশীলের হাতে দিয়ে বললে—এর উত্তর এখুনি চাই। স্বশীল চিঠিখানা পড়ে দেখলে, আজ কিভাবে কোথা থেকে রওনা হতে হবে, সেই ব্যবস্থা চিঠিতে লেখা । ইয়ার হোসেন অল্প
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩২০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।