পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হীরামানিক জ্বলে \Deసి আরও কিছুক্ষণ পরে লোকটা বিল চুকিয়ে দিয়ে চলে গেল । স্বশীল রাগের সঙ্গে সনৎএর দিকে চেয়ে বললে—ছি, ছি, এত নিৰ্ব্বোধ তুমি ? ও-কথা কেন বলতে গেলে ? সনৎ অপ্রতিভ মুখে বললে—আমি ভাবলাম ওতেই আপদ বিদেয় হয়ে যাবে। অত জিজ্ঞেস করার ওর দরকার কী ? আমরা যদি না ঘাই, তোর তাতে কিরে বাপু ? —তা নয়। কে কী মতলব নিয়ে কথা বলে, দরকার কী ওদের সঙ্গে সব কথা বলার ? জামাতুল্লা বললে—ঠিক কথা বলেছেন বাবুজি । সন্ধ্যার কিছু আগে ওরা রেস্ট রেন্ট থেকে বার হয়ে রাস্তায় নেমে দু-একটা জিনিস কেনবার জন্তে বাজারের দিকে চলেছে—এমন সময় জামাতুল্লা নিচু গলায় চুপি চুপি বললে—ওই দেখুন সেই লোকটা ! স্বশীল ও সনৎ চেয়ে দেখলে, সেই মালয় লোকটা একটা দোকানে কি একটা জিনিস কিনছে । ওদের দিকে পিছন ফিরে । স্বশীল বললে—চল আমরা এখান থেকে চলে যাই—মোড়ের দোকানে জিনিস কিনি C外 I জিনিস কিনতে একটু রাত হয়ে গেল। ওরা বড় রাস্তা বেয়ে অনেকটা এসে ওদের হোটেল যে গলিটার মধ্যে সে গলিটাতে ঢুকতে যাবে, এমন সময় কি একটা ভারি জিনিস সুশীলের ঠিক বঁ হাতের দেয়ালে জোরে এসে লেগে ঠিকয়ে পড়ল সামনে রাস্তার ওপরে। ওরা চমকে উঠল। জামাতুল্লা পথের ওপর থেকে জিনিসটা কুড়িয়ে নিয়ে বললে— সৰ্ব্বনাশ । ওরা দুজনে নিচু হয়ে জিনিসটা দেখতে গেল—কিন্তু জামাতুল্লা বললে—বাবুজি, ছুটে অস্বিন, এখানে আর দাড়াবেন না বলছি ! দুজনে জামাতুল্লার পিছনে পিছনে ক্রতপদে চলতে চলতে বললে—কৗ, কী হয়েছে ? কী জিনিস ওটা ? মিনিট পাঁচ ছয় ছুটবার পর নিজন গলিটার শেষ প্রান্তে ওদের হোটেলটা দেখা গেল । জামাতুল্ল হাই ছেড়ে বললে—যাক খুব বেঁচে যাওয়া গিয়েছে! এখান মালয় দেশের ছুড়েমার৷ ছুরি । ওরা দশ বিশ গজ ভফাভ থেকে এই ছুরি ছুড়ে লোকের গলা দুখানা করে কেটে দিতে পারে। আমাদের তাগ করেই ছুরিখানা ছুড়েছিল—কিন্তু অন্ধকারে ঠিক লাগেনি। ওখানে দাড়িয়ে থাকলে, যে ছুড়েছে তার আর-একখানা ছুরি ছুড়তেই বা কতক্ষণ ? সনৎ সেই ভারি ছোৱাখানা হাতে করে বললে—ও, এ গলায় লাগলে পাঠ কাটার মত মুণ্ডু কেটে ছটুকে পড়ত! কানের পাশ দিয়ে তীর গিয়েছে! স্বশীল বললে—এ সেই গুপ্ত সম্প্রদায়ের লোকের কাজ। আমাদের পেছনে লোক লেগেছে ।