হীরামানিক জ্বলে ৩১১ দেখলে আমি চিনতে পারব—তার ধারে একটা পাহাড়, পাহাড়ের গা বেয়ে একটা ঝর্ন পড়েছে সমূদ্রে। বড় বড় পাথর পড়ে আছে, পাথরগুলো সাদা রঙের । স্বশীল হেসে বললে—তোমার সেই বিন্ধমুনির দ্বীপ ? জামাতুল্লা গম্ভীর মুখে বললে—হাসবেন না বাবুজি। এসব কাজে নেমে এ দেশের সব দেবতাকে মানতে হবে । না মানলে বিপদ হতে কতক্ষণ ? আমি খুব ভাল করেই তা জানি । ইয়ার হোসেন বললে—বুঝলাম, ও সব এখন রাখে। সাঙ্গাপান থেকে কোন দিকে যেতে হবে, কত দূরে ? একটা আন্দাজ দাও—একটা নটিক্যাল চার্ট করে নেওয়া যাক। —আমরা সাঙ্গাপান থেকেই রওয়ান হয়ে যাই পূৰ্ব্ব-দক্ষিণ কোণে—আন্দাজ দুশো মাইল —সেখান থেকে পূৰ্ব্বে উত্তর-পূর্ব কোণে যাই আন্দাজ পঞ্চাশ মাইল। এইখানে সেই ডুবো পাহাড়ের জায়গাট—ষতদূর আমার মনে হচ্ছে— ইয়ার হোসেন অসহিষ্ণুভাবে বললে—যতদূর মনে হলে তো হবে না! আমাদের সেদিকে যেতে হবে ধে। স্থলু সমুদ্রের সর্বত্র তো ঘুরে বেড়াতে পারা যাবে না। আচ্ছা তুমি সে দ্বীপ কতদূর থেকে চিনতে পারবে ? নেমে, না জাহাজে বলে ? —জাহাজে বসে চিনতে পারব ওই সাদা পাথরের পাহাড় আর ঝর্ন দেখে। —কত সাদা পাথরের পাহাড় থাকে — —না সাহেব, তা নয় । সে পাথরের পাহাড়ের গড়ন অন্ত রকম । দেখলেই চিনব । ইয়ার হোসেন আর স্বশীল দুজনে মিলে মোটামুটি ম্যাপ একে নিয়ে সেদিন রাত্রে আর একবার মিলিয়ে নিলে জামাতুল্লার বর্ণনার সঙ্গে । চীনা জাঙ্ক, ভাড়া করা হল। ভূ-মাসের মত চাল, আটা, চা, চিনি বোঝাই করে নেওয়া হল জাঙ্কে—আর রইল বিয়ারের কাঠের বাক্সভত্তি অস্ত্রশস্ত্র মেসিন গান । ইয়ার হোসেন প্রস্তাব করলে—এখানে বিলম্ব করা উচিভ নয়। আজ রাত্রেই যাওয়া স্বাক—শত্রু লাগতে পারে— 鬱 জামাতুল্লা বললে—সে কথা ঠিক। কিন্তু রাত্রে হারবার-মাস্টার জাহাজ কি নেীকে ছাড়তে দেবে না, পোর্ট পুলিসে ধরবে। এসব জায়গায় এই নিয়ম। বোম্বেটে ডাকাতের আড্ডা কিনা স্থলু সী! কড়া নিয়ম সব। —তবে ? —কাল সকালে চলুন সাহেব— ইয়ার হোসেন দ্বিধার সঙ্গে এ প্রস্তাবে মত দিলে। স্বশীলকে ডেকে বললে—রাতের অন্ধকারে খাওয়া ভাল ছিল। দিনের আলোয় সকলের মনে কৌতুহল জাগিয়ে যাওয়া ভাল না। যাই হোক, উপায় কী ? সকাল আটটার পরে সাঙ্গাপান থেকে ওদের নোঁকো ছাড়ল। মাজ দেড় টনের চীন জাম্ব-সমূত্রে মোচার খোলার মত। কিন্তু জামাতুল্লা বললে—জাঙ্ক, হঠাৎ ডোৰে ন',
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩২৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।