পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী و& 0 জামাতুল্লা চোখ পাকিয়ে বললে-হশিয়ার । আমি আর ধাই হই—অরণের ভয় করি তাঁ তুমি বলতে পারবে না, হলদেমুখে ধার— স্বশীল ধমক দিয়ে বললে—ও কী হচ্ছে জামাতুল্লা ? এ সময়ে ঝগড়া বিবাদ করে লাভ কৗ ? সারেং যা বলছে তাই কর— জামাতুল্ল হাতের চাক ঘোরাতেই জাঙ্ক, পাহাড়ের একেবারে বিশ গজের মধ্যে এসে পড়ল—ঠিক একেবারে সামন-সামনি—সবাই ছুরু-ছুক্ল বক্ষে চেয়ে আছে, সামনে নিশ্চিত মৃত্যুর ঘাটি, এ থেকে কী করে চীনা জাঙ্ক বঁচিবে কেউ বুঝছে না—দেখতে দেখতে বিশ গজের ব্যবধান ঘুচে গেল—দশ গঙ্গ— - আর বুঝি জাঙ্ক, রক্ষা হয় না—মতলব কী চীনাটার ?—সবাই বিস্ফারিত চক্ষে চেয়ে আছে বুকের ভিতর ঢেকির পাড় পড়ছে সবারই—হঠাৎ সারেং ক্ষিগ্রহস্তে প্রকাও একটা জাহাজী কাছি স্বকৌশলে সামনের দিকে অব্যর্থ লক্ষ্যে ছুড়ে দিয়ে বললে—ডাইনে হাল মার-- সঙ্গে সঙ্গে একটা আশ্চৰ্য্য কাও ঘটে গেল যা ইয়ার হোসেন ও জামাতুল্লা তাদের জাহাজী মাজ-জীবনের অভিজ্ঞতায় কখনো দেখে নি। জাহাজ ডানদিকে ঘুরে পাহাড়ের গুড়িটা পেরিয়ে যেতেই সারেং-এর কাছি গিয়ে পাহাড়ের সরু অংশটা জড়িয়ে ধরল এবং পেছন দিক দিয়ে ঘড়-বড় করে নোঙর পড়ার শবে সবাই বুঝল বড় সী-অ্যাঙ্কর অর্থাৎ সমূত্রের মধ্যে ফেলার বড় নোঙর তার স্বাঢ় আঁকশির মুখ দিয়ে সমূত্রের তলায় পাথর ও মাটি আঁকড়ে ধরলেই জাহাজের অগ্রগতি বাধাপ্রাপ্ত হবে । বে করে অত বড় জাঙ্ক থানা ডিঙি নোঁকোর মত ঘুরে গেল আর পরক্ষণেই স্থির, অচল হয়ে দাড়িয়ে গেল পাহাড় থেকে তিন-চার গজের মধ্যে। জাঙ্ক, আর পাহাড়ের মধ্যে কেবল একফালি সরু সাগর-জল, একটা বড় হাঙর তার মধ্যে কষ্টে সাতার দিতে পারে । ইয়ার হোসেন বলে উঠল—সবাস সারেং ! স্বশীল ও সনৎ নিশ্বাস ফেলে বললে—খুব বাচিয়েছে বটে— জামাতুল্লা চুপ করে রইল। - চীনা সারেং হলদে দাত বার করে হাসতে হাসতে বললে—বিদেশী লোক এখানে জাহাজ চালাতে পারে না, স্যার! জামাতুল্লা মাল্লাগিরি যা জানে, তা খাটে চাটগায়ের বন্দরে—এ সব গে জায়গা নয়—এখানে জাহাজ চালাতে হলে পেটে বিষ্ঠে চাই অনেকখানি— ইয়ার হোসেন বললে—এখন কী করা যাবে বলো। জাহাজ তো আটকে গেল। সারেং ওদের অভয় দিয়ে বললে—জাঙ্ক, আটকায় নি। জোয়ার এলেই সকালে জাঙ্ক, ছাড়া নিরাপদ । সকলে দুর-ফুরু বক্ষে সকালের প্রতীক্ষায় রইল। স্বশীল আর জামাতুল্লা ভাল করে ঘুতেই পারলেন। খুব ভোরে উঠে জামাতুল্লাকে বিছানা থেকে উঠিয়ে স্বশীল বললে—এস, চেয়ে দেখ-চল বাইরে- - জামাতুর বাইরে এসে আনন্সে উৎফুর হয়ে বললে—ওই সেই সাদা পাহাড় আর সেই