হীরামানিক জলে రిy a স্বীপ ! আমি কাল রাত্রেই বুঝেছিলাম বাবুজি, কাউকে বলিনি— —কেন ? —কী জানি বাবুজি, চীনা সারেংটাকে আর এই হোসেন সাহেবকে আমার তেমন যেন বিশ্বাস হয় না, খোদার দিব্যি বলছি—ওদের সামনে মুখ খোলে না আমার । হোসেন সাহেব আন্ত গুগুলোক, বাধ্য হয়ে ওর সাহায্য নিতে হয়েছে, কিন্তু সিঙ্গাপুরে ওর নাম শুনে সবাই ভয় পায় । —সে কথা আর এখন ভেবে লাভ কী বলে ! ওদের নিয়েই কাজ করতে হবে যখন। ইয়ার হোসেনকে বলি কথাটা । ইয়ার হোসেন সব গুনে জামাতুল্লাকে ডেকে বললে—কোন সন্দেহ নেই তোমার ? এই দ্বীপ ঠিক ? -टैिक । —আমরা নেমে কিন্তু জাঙ্ক ছেড়ে দেব—ঠিক করে আখ এখনও। স্বশীল ও জামাতুল্লা আশ্চৰ্য্য হয়ে বললে—জাঙ্ক, ছেড়ে দেবেন কেন ? —আমি ওদের অন্য এক গল্প বলেছি। আমি বলেছি জঙ্গলে মাঠের ইজার নিয়েছি ডাচ, গবর্মেন্টের কাছে—এখানে আমরা এখন থাকব কিছুদিন । ওদের বলতে চাই নে—চীনেরা লোক বড় ভাল নয়— দুপুরের পর জালি বোটে জিনিসপত্র ও দুটি ছোট ছোট তাবু সমেত ওদের সকলকে অদূরবর্তী দ্বীপের শিলাবৃত তীরভূমিতে নামিয়ে জাঙ্কের সারেং তার ভাড়া চুকিয়ে নিয়ে চলে গেল । স্বশীল ইয়ার হোসেনকে বললে—ডাচ ইস্ট ইণ্ডিজের দ্বীপ তো এটা ? ডাচ, গবর্মেন্টের কোন অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল কিন্তু— —সে সব বড় হাঙ্গামা । ডাচ, গবর্মেন্টের কাছে কৈফিয়ত দিতে দিতে জান যাবে তাহলে ; কেস যাচ্ছি আমরা—ও দ্বীপে কতদিন আমরা থাকব! হয়ত আমাদের সঙ্গে পুলিস পাহার থাকত—সব মাটি হত। o জামাতুল্ল দ্বীপের মাটিতে নেমে কেমন যেন স্বপ্রমুগ্ধের মত চারিদিকে চেয়ে দেখতে লাগল। এতকাল পরে সে যে এখানে আসবে তা মেটেবুরুজের মাল্লাপাড়ার হোটেলে সানকিতে ভাত খেতে বসে কখনও কি ভেবেছিল ? সে ভেবেছিল তার দুঃসাহসের জীবন শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই বিন্ধমুনির দ্বীপ আবার ! স্বশীল ভাবছিল, কী অদ্ভুত যোগাযোগ । বাংলাদেশের পাড়াগায়ে জমিদারের ছেলে সে চিরকাল বসেই খাবে পায়ের ওপর পা দিয়ে, নিৰ্ব্বিয়ে জমিজমার খাজনা শোধ, দুপুরে লম্বা ঘুম দেবে, বিকেলে দুপুরে মাছ ধরবে, সন্ধ্যায় বৈঠকখানায় পৈতৃক তাকিয়া হেলান দিয়ে তাল দাবা খেলবে, রাত্রে পিঠে-পায়েস খেয়ে আবার ঘুম দেবে—এই সনাতন জীবনযাত্র-প্রণালীর কোন ব্যতিক্রম হয়নি তার পিতৃপিতামহের বেলায় —তার বেলাতেও সে ধারা অক্ষুণ্ণই থাকত যদি
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৩০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।