হীরামানিক জলে ৩২১ বৃৎহিত অরণ্যভূমি কঁাপিয়ে তুলবে, হায়েনার অট্টহাসিতে বুকের রক্ত শুকিয়ে দেবে। সনৎ সবই বুঝছে—কিন্তু কোন উপায় নেই। বন্দুকটার জাওয়াজ করলে তাবুর লোকদের তার সন্ধান দেওয়া চলত বটে—কিন্তু বন্দুকে গুলি নেই। শেষ স্থটো টোটা অজগরের দিকে সে ছুড়েছে। তিমিরময়ী রান্ত্রি নামল । অসহায় অবস্থায় চুপ করে কাত হয়ে পড়ে থাকা ছাড়া তার কোন উপায় নেই। প্রখমটা তার মনে খুব ভয় হল—কিন্তু মরীয়ার সাহসে সাহসী হয়ে শেষ পর্য্যন্ত সে চুপ করে শুয়েই রইল। মৃত অজগরটাকে অন্ধকারে আর দেখা যায় ন!—কিন্তু তার হিম-শীতল আলিঙ্গন প্রতিমুহূর্তে সনৎকে স্মরণ করিয়ে দিতে লাগল ষে প্রাণের বদলে সে প্রাণই নিতে চায়। সারারাত্রি এভাবে কাটলে বোধ হয় সনৎ সে যাত্র ফিরত ন!—কিন্তু অনেক রাত্রে হঠাৎ সনৎএর তন্ত্রা গেল ছুটে । অনেক লোক আলো নিয়ে এসে ডাকাডাকি করছে। ইয়ার হোসেনের গলা শোনা গেল—হালু-উ-উ-মিঃ রায়— সনৎএর সর্বশরীর ঠাণ্ডায় অবশ হয়ে গিয়েছিল—সে গল দিয়ে স্বর উচ্চারণ করতে পারলে না। কিন্তু ইয়ার হোসেনের টর্চের আলো এসে পড়ল ওর ওপরে। সবাই এসে ওকে ঘিরে দাড়াল। পাশের মৃত অজগর দেখে ওরা আগে ভেবেছিল সপের বেষ্টনে সনৎও প্রাণ হারিয়েছে —তারপর ওকে হাত নাড়তে দেখে বুঝলে ও মরে নি। র্তাবুতে নিয়ে গিয়ে সেবা শুশ্রুষা করতে সনৎ চাঙ্গা হয়ে উঠল। ইয়ার হোসেন সেদিন ওদের ডেকে পরামর্শ করতে বসল। জামাতুল্লাকে বললে—কই, তোমার সে মন্দিরের বা শহরের ধ্বংসাবশেষ তো দেখি নে কোনদিকে। জামাতুল্লা বললে—আমি তো আর মেপে রাখি নি মশাই ক-পা গেলে শহর পাওয়া যাবে —সবাই মিলে খুজে দেখতে হবে। স্বশীল একটা নক্স দেখিয়ে বললে—এ ক-দিনে যতটা এসেছি, জঙ্গলের একটা খসড়া ম্যাপ তৈরি করে রেখেছি। এই দেখে আমরা যে-ধে পথে এসেছি দেখতে হবে, সে পথে আর যাব না । আবার ওদের দল বেরিয়ে পড়ল—দু-দিন পরে সমুদ্র-কঙ্গোল শুনে বনঝোপের আড়াল থেকে বার হয়ে ওরা দেখলে—সামনেই বিরাট সমুদ্র । সনৎ চিৎকার করে উঠল—আলাটা । আলাট । মুশীল বললে—তোমার এ চিৎকার সাজে ন। সনৎ । তুমি জেনোফনের বণিত গ্ৰীক সৈন্ত নাও, সমুদ্রের ধারে তোমার বাড়ী নয়— ইয়ার হোসেন বললে—ব্যাপার কী ? আমি তোমাদের কথা বুঝতে পারছিনে— সনৎ বললে—জেনোফন বলে একজন প্রাচীন যুগের গ্রীক লেখক-নিজেও তিনি একজন সৈনিক-পারস্ত দেশের অভিযান শেষ করে ফিরবার সমস্ত দুঃখ-কষ্টট দশ সহক্সের
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৩৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।