পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হীরামানিক জ্বলে HIV আমাহুষিক পরিশ্রম । আবার পাথর তুলে ফেলা হল—আবার সিড়ি । স্বশীল বললে— ধারা এ গোলকধাঁধা করেছিল, তারা খানিকদূর গিয়ে একবার একখানা পাথর সোজা করে পথ বুজিয়েছে, তার পরেরটা সিড়ির মত পেতে বুজিয়েছে—এই এদের কৌশল, বেশ বোঝা যাচ্ছে । জামাতুল্লা ওদের সতর্ক করে দিলে। বললে—বাবুজী, অনেকটা নিচে নেমে এসেছি । খারাপ গ্যাস থাকতে পারে, দম-বন্ধ হয়ে মারা যেতে পারি সবাই। র্তাবুতেও সন্দেহ করবে। চলুন আজ ফিরি। তাবুতে ফিরবার পথে জামাতুল্লা বললে— বাবুজি, ইয়ার হোসেনকে এর খবর দেবেন না। —কেন ? —কী জানি কী আছে ওর মনে । যদি রত্নভাণ্ডারের সন্ধানই পাওয়া যায়, তবে ইয়ার হোসেন কী করবে বলা যায় না। ওর সঙ্গে লোক বেশি। প্রত্যেকে গুগু ও বদমাইস । মানুষ খুন করতে ওরা এতটুকু ভাববে না। ওদের কাছে মশা টিপে মারাও যা, মানুষ মারাও তাই । ইয়ার হোসেনের মন যথেষ্ট সন্দিগ্ধ। র্তাবুতে ফিরতে সে বললে—কোথায় ছিলে তোমরা ? স্বশীল বললে—ফটো নিচ্ছিলাম। ইয়ার হোসেন হেসে বললে—ফটো নিয়ে কী হবে, যার জন্তে এত কষ্ট করে আলা—তার সন্ধান কর । ইয়ার হোসেনের জনৈক মালয় অঙ্গচর সেদিন ছপুরে একটা পাথরের বৃত্বমূৰ্ত্তি কুড়িয়ে পেলে গভীর বনের মধ্যে। খুব ছোট, কিন্তু অতটুকু মূৰ্ত্তির মধ্যেও শিল্পীর শিল্পকৌশলের যথেষ্ট পরিচয় বর্তমান । রাত্রে জ্যোৎস্ব উঠল । স্বশীল তাবু থেকে একটু দূরে একটা কাঠের গুড়ির ওপর গিয়ে বসল। ভাবতে ভাল লাগে এই সমুদ্রমেখলা দ্বীপময় রাজ্যের অতীত গৌরবের দিনের কাহিনী। রাত্রের ধামঘোৰী দুদুতি যেন বেজে উঠল—ধারাষন্ত্রে স্বান সমাপ্ত করে, কুকুমচন্দনলিপ্ত দেহে দিগ্বিজয়ী নৃপতি চলেছেন অন্তঃপুরের অভিমুখে । বারবিলাসিনীরা তাকে স্নান করিয়ে দিয়েছে এইমাত্র—তারাও ফিরছে তার পিছনে পিছনে, কারে হাতে রজত কলস, কারে হাতে স্ফটিক কলস••• আধো-অন্ধকারে কালো মত কে একটা মানুষ বনের মধ্যে থেকে বার হয়ে স্বশীলের দিকে ছুটে এল আততায়ীর মত—স্বশীল চমকে উঠে একখানা পাথর ছুড়ে মারল। মানুষটা পড়েই জানোয়ারের মত বিকট চীৎকার করে উঠল—তারপর আবার উঠে আবার জুটল ওর দিকে। স্বশীল ছুট দিলে তাবুর দিকে। - - ওর চিৎকার শুনে তাবু থেকে সনৎ বেরিয়ে এল। ধাবমান জিনিসটাকে লে গুলি করলে। সেটা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দেখা গেল একটা ওরাং-ওটাং। জামাতুঙ্গা ও ইয়ার হোসেন দুজনে তিরস্কার করলে স্থলীলকে।