হীরামানিক জ্বলে Wood সেদিনও ফিরে গেল। জামাতুঙ্গাকে পরদিন সঙ্গে করে নিয়ে এল-তন্ন তন্ন করে চারিদিক খুজে দেখলে ঘরের, কোথাও কিছু নেই। জামাতুল্লা বললে—কী মনে হয় বাবুজি ? —তোমার কী মনে হয় ? —এই সিড়ি আর চাতাল, চাতাল আর সিড়ি—ষাট ফুট গেঁথে মাটির নিচে শেষে নাচনেওয়ালী পুতুল! ছো: বাবুজি—এর মধ্যে আর কিছু আছে। —বেশ, কী আছে, বার কর । মাথা খাটাও । —ত তো খাটাব—এদিকে ইয়ার হোসেনের দল ষে ক্ষেপে উঠেছে। কাল ওরা কী বলেছে জানেন ? ( . —কী রকম ? —আর দুদিন ওরা দেখবে-তারপর নাকি এ দ্বীপ ছেড়ে চলে যাবে। তা ছাড়া জার এক ব্যাপার। আপনাকেও ওরা সন্দেহ করে । বনের মধ্যে রোজ আপনি কী করেন। আমায় প্রায়ই জিগ্যেস করে। —তুমি কী বল ? —আমি বলি বাবুজি ফটো তোলে, ছবি অঁাকে । তাতে ওরা আপনাকে ঠাট্টা করে। ওসব মেয়েলী কাজ । —যারা এই নগর গড়েছিল, পুতুল তৈরি করেছিল, পাথরে ছবি একেছিল—তারা পুরুষ মানুষ ছিল জামাতুল্লা। ইয়ার হোসেনের চেয়ে অনেক বড় পুরুষ ছিল—বলে দিও তাকে । স্বশীলকে রেখে জামাতুল্লা ফিরে যেতে চাইলে। নতুবা ইয়ার হোসেনের দল সন্দেহ করবে। যাবার সময় স্বশীল বললে—কোন উপায়ে এখানে একটা আলোর ব্যবস্থা করতে পার । টর্চ জালিয়ে কতক্ষণ থাকা যায় । আর কিছু না থাক সাপের ভয়ও তো আছে। জামাতুল্লা বললে—আমি এক্ষুনি ফিরে আসছি লণ্ঠন নিয়ে বাবুজি। আপনি ওপরে উঠে বস্কন, এ পাতালের মধ্যে একা থাকবেন না— so স্থলীল বললে—ন, তুমি যাও—আমি এখানেই থাকব। পকেটে একটুকরো মোমবাতি এনেছি—তাই জালাব । একটুকরো বাতি জালিয়ে স্বশীল ঘরটার মধ্যে বসে ভাবতে লাগল। বাইরে এত বড় রাজ্য স্বারা প্রতিষ্ঠা করেছিল, কোন জিনিস গোপন করবার জন্যেই তারা এই পাতালপুরী তৈরী করেছিল, এত কষ্ট স্বীকার করে নর্তকী-মূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠা করবার জন্তে নয় নিশ্চয়ই। হঠাৎ নর্তকী পুতুলটার দিকে ওর দৃষ্ট পড়তে ও বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হয়ে গেল। কী ব্যাপার এটা ? এতক্ষণ মূৰ্ত্তিটার যতখানি তার দিকে ছিল, সেটা যেন সামান্ত একটু পাক খেয়ে খানিকটা ঘুরে দাড়িয়েছে। স্বশীল চোখ মুছে আবার চাইলে।
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৪৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।