পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Jy বিভূতি-রচনাবলী —জামাতুঙ্গার কী দোষ । আপনি বরং আমাকে দোষ দিতে পারেন— —জারে আপনি তো ছবি আঁকিয়ে পুরুষ মাহুষ। এসব কাজ আপনার না। স্বশীল রাত্রে চুপি চুপি জামাতুল্লাদের নর্তকী পুতুলের ঘটনা সব বললে। ওদের দু-জনকেই যেতে হবে, নতুবা ছিপি উঠবে না। জামাতুল্লা বললে—কিন্তু আমাদের দু-জনের একসঙ্গে ধাওয়া সম্ভব নয় বাবুজি । —কেন ? —জানেন না,-এর মধ্যে নানারকম ষড়যন্ত্র চলছে। ওরা আপনাদের চেয়ে আমাকেই দোষ দেবে বেশি । আপনাকে ওরা নিরীহ, গোবেচারি বলে ভাবে— —সেটা অন্যায়। —আপনার ভাল মান্থব, আমার হাতের পুতুল-পুতুল যেমন নাচায়, তেমনি আপনার আমার হাতে— শেষের কথাটা শুনে মুশীলের আবার মনে পড়ল নর্তকী-মুক্তির কথা। কাল হয়ত বেরুনো যাবে না, ইয়ার হোসেনের কড়া নজরবন্দীর দরুন। আজই রাত্রে অন্য দল ঘুমূলে সেখানে গেলে ক্ষতি কী ? সনৎকে বললে—সন, তৈরি হও । আজ রাত্রে হয় আমাদের জীবন, নয়তো আমাদের মরণ। পাতালপুরীর রহস্ত আজ ভেদ করতেই হবে। আজ আঁধার রাত্রে চুপি চুপি বেরুবে আমার সঙ্গে—দিনের আলোয় সব ফাস হয়ে যাবে। জামাতুল্লা বললে—কেউ টের না পায় বাবুজি, জুতো হাতে করে সব যাবেন কিন্তু। আহারাদির পর্ব মিটে গেল। দাবানল জলে উঠেছে আজ ওদের মনে, বনের সাময়িক দাবানলকেও ছাপিয়ে তার শিখা সমস্ত মনের আকাশ ব্যেপে বেড়ে উঠল। দুটো রাইফেল, একটা রিভলভার, একটা শাবল, একটা গীতি, খানিকটা দড়ি, চার-পাঁচটা মোমবাতি, কিছু খাবার জল, এক শিশি টিংচার আইডিন, খানকতক মোট রুটি-তিনজনের মধ্যে এগুলো ভাগ করে নিয়ে রাত একটার পরে ওরা অন্ধকারে গা-ঢাকা দিয়ে তাবু থেকে বেরুল । ইয়ার হোসেনের একজন মালয় অস্থচর উণ্টোমুখে দাড়িয়ে 'বলো" ( রামদাও) হাতে পাহারা দিচ্ছে । অন্ধকারে এরা বুক ঘেষে চলে এল•••সে লোকটা টের পেলে না। সনৎ বললে--আমি সে পুতুলটা একবার দেখব— অদ্ভুত রাত্রি বনের মাথায় মাথায় অগণিত তারা, বহুকালের স্বগু নগরীর রহস্তে নিশীথ রাত্রির অন্ধকার যেন ধর্ম-থম্ করছে, সমস্ত ধ্বংসস্তুপটি যেন মুহূর্বে শহর হয়ে উঠতে পারে—ওর অগণিত নরনারী নিয়ে। লতাপাত, ঝোপ-ঝাপ, মহীরুহের জল খাড়া হয়ে সেই পরম মুহূর্তের প্রতীক্ষায় যেন নিশ্চল হয়ে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে। অন্ধকারে একটা লয়-সর শব্দ হতে লাগল সামনের মাটিতে। সকলে থমকে দাড়াল হঠাৎ। সনৎ ও স্বশীল একসঙ্গে টর্চ টিপলে-প্রকাও একটা