হীরামানিক জ্বলে S& অজগর সাপ আস্তে আস্তে ওদের পাচ হাত তফাত দিয়ে চলে যাচ্ছে। সকলে পাথরের পুতুলের মত দাড়িয়ে রইল, সাপট বনের মধ্যে অদৃগু হয়ে গেল। তারপর ওরা আবার চলল । গহবরের মুখে ওরা লতাপাত দিয়ে ঢেকে রেখে গিয়েছিল, তিনজনে মিলে সেগুলো সরিয়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে লাগল। সনৎ বললে—এ তে বড় আশ্চৰ্য্য ব্যাপার দেখছি— কিন্তু পাতালপুরীর কক্ষের সে নর্তকী-মুক্তিটা দেখে ওর মুখে কথা সরল না। শিল্পীর অদ্ভূত শিল্পকৌশলের সামনে ও যেন হতভম্ব হয়ে গেল । স্বশীল বললে—শুধু এই মূৰ্ত্তিটি কিউরিও হিসেবে বিক্রী করলে দশহাজার টাকার যে-কোন বড় শহরের মিউজিয়ম কিনে নেবে—তবে, আমাদের দেশে নয়-ইউরোপে। জামাতুল্লা বললে- ধরুন বাবুজি নাচনেওয়ালী পুতুলটা সবাই মিলে—পাক খাওয়াতে হবে একে বারকয়েক এখনও ৷ মিনিট দুই সবাই মিলে পাক দিয়ে মূৰ্ত্তিটাকে ঘোরালো ধেমন স্টপার ঘোরায় বোতলের মুখে। তারপর সবাই সস্তপণে যুক্তিটাকে ধরে উঠিয়ে নিলে। স্টপারের মতই সেটা খুলে এল । সঙ্গে সঙ্গে বিটম্ববেদীর নিচের অংশে বার হয়ে পড়ল গোলাকার একটা পাথরের চৌবাচ্চ। কুশীল উকি মেরে দেখে বললে—টর্চ ধর, খুব গভীর বলে মনে হচ্ছে— টর্চ ধরে ওরা দেখলে চৌবাচ্চা অন্তত সাত ফুট গভীর। তার তলায় কী আছে ওপর থেকে ভাল দেখা যায় না । সনৎ বললে—আমি লাফ দিয়ে পড়ব দাদা ? জামাতুল্লা বারণ করলে। এ সব পুরোনো কূপের মধ্যে বিষধর সর্প প্রায়ই বাসা বাধে, যাওয়া সমীচীন হবে না। দু-একটা পাথর ছুড়ে মেরে ওরা দেখলে, কোন সাড়াশল্প এল না আধ-অন্ধকার কূপের মধ্যে থেকে। তখন জামাতুল্লাই ঝুপ করে বাপ দিয়ে পড়ল ওর মধ্যে । কিছুক্ষণ তার আর কোন সাড়া নেই। স্বশীল ও সনৎ অধীর কৌতুহলের সঙ্গে বলে উঠল—কী-কী—কী দেখলে ? তবুও জামাতুল্লার মুখে কথা নেই। সে যেন কি হাতড়ে বেড়াচ্ছে চৌবাচ্চার তলায়। একটু অদ্ভুতভাবে হাতড়াচ্ছে—একবার সামনে যাচ্ছে, আবার পিছু হঠে আসছে। স্বশীল বললে—কী হল হে ? পেলে কিছু দেখতে ? জামাতুল্লা বললে—বাবুজি, এর মধ্যে কিছু নেই— -क्छूि cनहे ? —না বাবুজি। একেবারে ফাকা— —তবে তুমি ওর মধ্যে কী করছ জামাতুল্লা ?
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৫২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।