পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

や88 বিভূতি-রচনাবলী জামাতুল্লা ওদের সঙ্গে এসে যোগ দেবার অল্পক্ষণ পরেই সনৎ হঠাৎ কি ভেবে দেওয়ালের উত্তর কোণের সে চিহ্নটা চেপে ধরলে এবং সঙ্গে সঙ্গে পাথরের চৌবাচ্চার তলা একদিকে কাত হয়ে উঠতেই ফাক দিয়ে সনৎ নিচের দিকে অতলস্পর্শ অন্ধকারে লাফিয়ে পড়ল। স্বশীল ও জামাতুল্লা দুজনেই চমকে চিৎকার করে উঠল। অমন অতর্কিতভাবে সনৎ লাফ মারতে গেল কেন, ওরা ভেবে পেল না । কিন্তু লাফ মারলে কোথায় ? জামাতুল্লা সভয়ে বললে—সৰ্ব্বনাশ হয়ে গেল বাবুজি । তারপর ওরা দু-জনেই কিছু না ভেবেই পাথরের চৌবাচ্চার তলার ফাক দিয়ে লাফ দিয়ে পড়ল । ওরা ঘোর অন্ধকারের মধ্যে নিজেদের দেখতে পেলে । সনৎ অন্ধকারের ভেতর থেকেই বলে উঠল—দাদা, টর্চ জালো আগে, জায়গাটা কি রকম দেখতে হবে— ওরা টর্চ জেলে চারদিক দেখে অবাক হয়ে গেল। ওরা একটা গোলাকার ঘরের মধ্যে নিজেদের দেখতে পেলে—ঘরের দু-কোণে দুটো বড় পয়োনালীর মত কেন রয়েছে ওরা বুঝতে পারলে না। ছাদের যে জায়গায় কড়িকাঠের অগ্রভাগ দেওয়ালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবার কথা, সেখানে দুটাে বড়-বড় পাথরের গাথুনি পয়োনালী, একটা এদিকে, আর একটা ওদিকে । সমস্ত ঘরটায় জলের দাগ, মেঝে ভয়ানক ভিজে ও স্যাৎসেঁতে, যেন কিছুক্ষণ আগে এ ঘরে অনেকখানি জল ছিল। জামাতুল্লা বললে—এ ঘরে এত জল আসে কোথা থেকে বাবুজি ? স্বশীল কিছু বলতে পারলে না ; প্রকাণ্ড ঘর, অন্ধকারের মধ্যে ঘরের কোথায় কি আছে डांक ८वांश1थॉग्न नां । সনৎ বললে—ঘরের কোণগুলো অন্ধকার দেখাচ্ছে, ওদিকে কী আছে দেখা যাক— টর্চ ধরে তিন জনে ঘরের একদিকের কোণে গিয়ে দেখে অবাক চোখে চেয়ে রইল । স্বরের কোণে বড়-বড় তামার জালা বা ঘড়ার মত জিনিস, একটার ওপর আর একটা বসানে, ঘরের ছাদ পৰ্যন্ত উচু। সেদিকের দেওয়ালের গা দেখা যায় না—সমস্ত দেওয়াল ঘেষে সেই ধরনের রাশি-রাশি তামার জালা—ওরা এতক্ষণ ভাল করে দেখেনি, সেই তামার জালার রাশিই অন্ধকারে দেওয়ালের মত দেখাচ্ছিল। জামাতুল্ল বললে—এগুলো কী বাবুজি ? স্বশীল বললে—আমার মনে হয় এটাই ধনভাণ্ডার । সনৎ বললে—আমরা ঠিক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছি— জামাতুল্লা হঠাৎ অস্ত দেয়ালের দিকে গিয়ে বললে—এই দেখুন বাবুজি— সেদিকে দেয়ালের গায়ে বড় বড় কুলুঙ্গির মত অসংখ্য গর্ত। প্রত্যেকটার মধ্যে ছোট বড় কোঁটোর মত কি সব জিনিস ।