হীরামানিক জ্বলে ৩৪৭ সে সময়ে সনং বললে—ষ্ঠাখ দাদা, স্বাখ জামাতুল্লা সাহেব—এটা কিসের দাগ । ওরা পেছন ফিরে চেয়ে দেখলে সনৎ টর্চ ফেলে দেওয়ালের গায়ের একটা সাদা রেখার দিকে চেয়ে কথা বলছে। রেখাটা লম্বা অবস্থায় দেওয়ালের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পৰ্য্যন্ত টান । জামাতুল্লা বললে—এ দাগ নোনা জলের দ্বাগ—খুব টাটকা দাগ । স্বশীল ও সনৎ হতভম্ব হয়ে বললে—তার মানে ? জল আসবে কোথা থেকে ? জামাতুল্লা বললে—বডড অন্ধকার জায়গা, ভাল করে কিছুই তো মালুম পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু একবার ভাল করে ঘরের চারিধারে দেখা দরকার । অজানা জায়গায় সাবধান থাকাই ভাল। এত স্যাতসেঁতে কেন ঘরটা, আমি অনেকক্ষণ থেকে তাই ভাবছি। জামাতুল্লা ও সনৎ হাতড়ে হাতড়ে সোনার চাকৃতি বের করে থলের মধ্যে একরাশ পুরে ফেললে—পাথরের মুড়িও কিছু নিলে—বলা যায় না যদি এগুলো কোন দামী পাথর হয়ে পড়ে । বলা যায় কি ! সনৎ ছেলেমানুষ, সে এত সোনার চাকতি দেখে কেমন দিশেহারা হয়ে গেল—উন্মত্তের মত আজলা ভরে চাকতি সংগ্রহ করে তার তামার জালার মধ্যে থেকে, আর থলের ভেতর পুরে নেয়। যেন এ আরব্য উপন্যাসের একটা গল্প—কিংবা রূপকথার মায়াপুরী —পাতালপুরীর ধনভাণ্ডার । বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতায় বেলা দশটা থেকে বিকেল ছ-টা এস্তক কলম পিষে সাইরিশ টাকা ন-আনা রোজগার করতে হয় সারা মাসে। সেই হল রূঢ় বাস্তব পৃথিবী—মানুষকে ঘা দিয়ে শক্ত করে দেয়। আর এখানে কী, না—হাতের আঁজলা ভরে যত ইচ্ছে সোনা নিয়ে যাও, হীরে নিয়ে যাও—এ আলাদা জগৎ—পৃথিবীর অর্থনৈতিক আইন-কাকুনের বাইরে । বহু প্রাচীন কালের মৃত সভ্যতা এখানে প্রাচীন দিনের সমস্ত বৰ্ব্বর প্রাচুর্ঘ্য ও আমি অর্থনীতি নিয়ে সমাধিগর্ভে বিস্মৃতির ঘুমে অচেতন—এ দিন বাতিল হয়ে গিয়েছে, এ সমাজ বাতিল হয়ে গিয়েছে—একে অন্ধকার গহবর থেকে টেনে দিনের আলোয় তুলে বিংশ শতাব্দীর জগতে আর অর্থনৈতিক বিভ্ৰাট ঘটিও না।-- হঠাৎ কিসের শব্দে মুশীলের চিস্তার জাল ছিন্ন হল—বিরাট, উন্মত্ত, প্রচণ্ড শব্দ–যেন সমগ্র নায়াগ্রা জলপ্রপাত ভেঙে ছুটে আসছে কোথা থেকে—কিংবা শিবের জটা থেকে যেন গঙ্গা ভীম ভৈরব বেগে ইন্দ্রের ঐরাবতকে ভাসিয়ে মর্ত্যে অবতরণ করছেন। জামাতুল্লার চিৎকার শোনা গেল সেই প্রলয়ের শব্দের মধ্যে—জল জল! পালান— ওপরে উঠুন— - জামাতুল্লার কথা শেষ না হতে স্বশীলের হাটু ছাপিয়ে কোমর পর্যন্ত জল উঠল—কোমর থেকে বুক লক্ষ্য করে দ্রুতগতিতে উঠবার সঙ্গে সঙ্গে জামাতুল্লা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললে— ঐ দেখুন বাবু! স্বশীল সবিস্ময়ে ও সভয়ে চেয়ে দেখলে ঘরের ছাদের কাছাকাছি সেই দুটো পয়োনালা দিয়ে ভীষণ তোড়ে জল এসে পড়ছে ঘরের মধ্যে। চক্ষের নিমেঘে ওরা ইছর-কলে জাটুকা বি. 可。 ॐ==३,२.
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৬০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।