। কয়েকটি অপ্রকাশিত রচনা ৷ छूङ কি বাদামই হোত ঐশ পরামানিকের বাগানে। রাস্তার ধারেই বড় বাগানটা। অনেক দিনের প্রাচীন গাছপালায় ভৰ্ত্তি। নিবিড় অন্ধকার বাগানের মধ্যে—দিনের বেলাতেই। একটু দূরে আমাদের উচ্চ প্রাইমারি পাঠশালা। রাখাল মাস্টারের স্কুল। একটা বড় তুত গাছ আছে স্কুলের প্রাঙ্গণে । সেজন্যে আমরা বলি "তুততলার স্কুল’ । দুজন মাস্টার আমাদের স্কুলে। একজন হলেন হীরালাল চক্রবর্তী। স্কুলের পাশেই এর একটা হাড়ির দোকান আছে, তাই এর নাম "হাড়ি-বেচা-মাস্টার’। মাস্টার তো নয়, সাক্ষাৎ যম । বেতের বহর দেখলে, পিলে চমকে যায় আমাদের। টিফিনের সময় মাস্টার মশায়ের সব ঘুতেন। আমরা নিজের ইচ্ছে-মতে মাঠে-বাগানে বেড়িয়ে ঘণ্টাখানেক পরেও এসে হয়তো দেখি তখনও মাস্টার মশায়দের ঘুম ভাঙে নি। স্বতরাং তখন আমাদের টিফিন শেষ হোল না—টিফিনের মানে হচ্ছে ছুটি মাস্টার মশায়দের, ঘুমুবার ছুটি। সেদিনও এমনি হোল । রেল লাইন আমাদের স্কুল থেকে অনেক দূরে। আমরা মাংলার পুল বেড়িয়ে এলাম, রেল লাইন বেড়িয়ে এলাম—ঘণ্টাখানেক পরে এসেও দেখি এখনও হাড়ি-বেচা-মাস্টারের নাক ডাকচে । নারাণ বল্লে—ওরে চুপ চুপ, চেঁচাস নি, চল ততক্ষণ পরামানিকদের বাগানে বাদাম খেয়ে আসি— আমাদের দলে সবাই মত দিলে। আমি বল্লাম–বাদাম পাড়া সোজা কথা ? —তলায় কত পড়ে থাকে এ সময়— —চল তো দেখি— এইবার সবাই আমরা মিলে পরামানিকদের বাগানে ঢুকলাম পুলের তলার রান্ত দিয়ে। দুপুর ছুটে, রোদ ঝম্ ঝম্ কৱচে । শরৎকাল, রোদের তেজও খুব বেশি। গত বর্ষায় আগাছার জঙ্গল ও কাটা ঝোপের বেজায় বৃদ্ধি হয়েচে বাগানের মধ্যে। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে স্বড়ি পথ। এখানে-ওখানে মোটা লতা গাছের ডাল থেকে নেমে নিচেকার ঝোপের মাথায় চুলচে । আমরা এ বাগানের সব অংশে ঘাই নি, মস্ত বড় বাগানটা। পাক রাস্তা থেকে গিয়ে নদীর ধার পর্য্যস্ত লম্বা। পেয়ারাও ছিল কোনো কোনো গাছে । কিন্তু অসময়ের পেয়ার তেমন বড় হয় নি । ফল আরও ঘদি কোনো রকম কিছু থাকে, খুজতে খুজতে নদীর ধারের দিকে চলে গেলাম। বাদাম তো মিললোই না। বা বা পাওয়া গেল, ইট দিয়ে ছেচে তার শাস বের করবার
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৬৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।