শুভ কামন। రిగ్రీసి বৈকাল ও শীতের সন্ধ্যায় চায়ের মজলিস এখানে সরস ও আনন্দময় হয়ে উঠেচে । কত ঠোঙা ঠোঙা ‘অবাক জলপান ফেরিওয়ালার ঝুলির মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসে বাদল দিনে অতিথি সৎকারে সহযোগিতা করেচে ; মৌচাক"-এর ইতিহাসের সঙ্গে সে সবের ইতিহাসও জড়ানো ৷ একদিন স্বধীরবাবু বললেন–বিভূতিবাবু, মৌচাকের জন্তে লিখবেন ? আমি তো একপায়ে খাড়া। বললুম—নিশ্চয়ই। —কি লিখবেন বলুন। ছেলেদের উপন্যাস দিন। কি বলেন ? এভাবে ছেলেদের জন্য লেখা উপন্যাস 'চাদের পাহাড়'-এর সূত্রপাত। সুধীরবাবুর উৎসাহ না পেলে হয়তো ও বই লেখাই হোত না । 哆 আজকাল কলকাতা থেকে দূরে বাস করি। কিন্তু মৌচাক"-এর বৈকালিক আড্ডার আকর্ষণ এমন মোহ বিস্তার করেচে মনে, ষে, কলকাতায় এলেই ওখানে না গিয়ে পারি না । অন্ততঃ কিছুক্ষণের জন্যেও যাওয়া চাই-ই। বন্ধুবর সরোজ রায়চৌধুরী আপে, মণীন্দ্র বস্ব আসে, স্বধীরবাবু ও অপূৰ্ব্ব তো থাকেনই—অতীত দিনের আনন্দ মুহূৰ্ত্তগুলি আবার যেন সজীব হয়ে ওঠে। সে সব দিনের হারানো অস্থভূতিগুলি আবার ফেন ফিরে পাই। সেজন্তই মৌচাক" কাগজের ওপর আমার কেমন একটা ব্যক্তিগত টান আছে—এর ভালমন্দ ব্যক্তিগত লাভক্ষতির দৃষ্টি নিয়ে দেখি। আমি জানি ‘মৌচাক শুধু ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আনন্দবৰ্দ্ধন করে না। তাদের পিতামাতারও অবসর বিনোদনে ধথেষ্ট সাহায্য করে । চাইবাসায় একটি বন্ধু গভর্নমেন্টের এনজিনিয়ার ও বিদ্বান ব্যক্তি। আমায় বললেন— এবার "মৌচাক-এ হেম বাগচীর গরমেটো' কবিতা পড়েছেন ? আমি বললুম—এখনও পড়ি নি। —পড়ে দেখবেন। চমৎকার রস আছে ওর মধ্যে। আজ দুপুরে মশগুল হয়ে ছিলাম "মৌচাক’খানা নিয়ে। এ রকম বহু উদাহরণ দেওয়া যায়। একটা মাত্র মনে হৈাল । "মৌচাক"-এর লেখা যখন লিখতে বলি, তখন কল্পনা নেত্ৰে দেখি বহু ছোট ছোট ছেলে মেয়ে ও তাদের কৰ্ম্মক্লাস্ত পিতাঠাকুরদের উৎসুক দৃষ্টি, সবাই যেন এই লেখার দিকে চেয়ে রয়েছে একদৃষ্ট্রে—তবে অক্ষমতার জন্যে তাদের সে ঔংস্থক্য চরিতার্থ হয়তো সব সময় করে উঠতে পারি না—সে কথা আলাদা ।
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।