পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२br বিভূতি-রচনাবলী অনেকদিন রইলাম। তার পর সেরে উঠে একটা কমলালেবুর বাগানে কাজ পেয়ে সেখানেই এতদিন ছিলাম । বছর চার-পাচ শান্ত জীবন যাপন করবার পরে ভালো লাগলো না, তাই আবার বার হয়েছিলাম। কিন্তু বয়েস হয়ে গিয়েছে অনেক, ইয়ংম্যান, এবার আমার চলা বোধ হয় ফুরুবে । এই ম্যাপখানা তুমি রাখে। এতে রিখটারসভেল্ড পৰ্ব্বত ও যে নদীতে আমরা হীর। পেয়েছিলাম, মোটামুটি ভাবে আঁকা আছে। সাহস থাকে সেখানে যেও, বড়মানুষ হবে। বুয়র যুদ্ধের পর ওই অঞ্চলে ওয়াই নদীর ধারে দু-একটা বড় হীরার খনি বেরিয়েছে। কিন্তু আমরা যেখানে হীরা পেয়েছিলুম তার সন্ধান কেউ জানে না। যেও তুমি। ডিয়েগো আলভারেজ গল্প শেষ করে আবার অবসন্ন ভাবে বালিশের গায়ে ভর দিয়ে শুয়ে পড়ল । જfis শঙ্করের সেবাশুশ্ৰুষার গুণে ডিয়েগো আলভারেজ সেযাত্রা সেরে উঠল এবং দিন পনেরো শঙ্কর তাকে নিজের কাছেই রাখলে। চিরকাল যে পথে পথে বেড়িয়ে এসেছে, ঘরে তার মন বসে না। একদিন সে যাবার জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। শঙ্কর নিজের কৰ্ত্তব্য ঠিক করে ফেলেছিল। বললে, চল—তোমার অমুখের সময় যে-সব কথা বলেছিলে, মনে আছে ? সেই হলদে হীরের খনি ? অমুখের ঝোকে আলভারেজ যে-সব কথা বলেছিল, এখন সে সম্বন্ধে বৃদ্ধ আর কোনো কথাটি বলে না। বেশীর ভাগ সময় চুপ করে কি যেন ভাবে। শঙ্করের কথার উত্তরে বৃদ্ধ বললে—আমিও কথাটা যে না ভেবে দেখেছি তা মনে কোরো না । কিন্তু আলেয়ার পেছনে ছুটবার সাহস আছে তোমার ? শঙ্কর বললে—আছে কি না দেখতে দোষ কি ? আজই বলে তো মাভো স্টেশনে তার করে আমার বদলে অন্য লোক পাঠাতে বলি । আলভারেজ কিছু না ভেবেই বললে—কর তার। কিন্তু আগে বুঝে দেখো, যারা সোনা ব। হীরা খুজে বেড়ায় তারা সব সময় তা পায় না। আমি আশী বছরের এক বুড়ে লোককে জানতাম, সে কখনো কিছু পায় নি—তবে প্রতিবারই বলতে, এইবার ঠিক সন্ধান পেয়েছি, এইবার পাবো! আজীবন অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে আর আফ্রিকার ভেল্ডে প্রসপেকৃটিং করে বেড়িয়েছে।-- আরও দিন দশেক পরে দুজনে কিস্থমু গিয়ে ভিক্টোরিয়া নায়াগ্র হ্রদে ষ্টীমার চড়ে দক্ষিণ মুখে মোয়ান্‌জার দিকে যাবে ঠিক করলে। পথে এক জায়গায় বিস্তীর্ণ প্রাস্তরে হাজার হাজার জেব্রা, জিরাফ, হরিণ চরতে দেখে শঙ্কর