পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চাদের পাহাড় g\రి হয়ে ওপারে যাবো। আর কত ওপরে উঠবে ? যদি ধরে এই অংশে স্তাড লট নাই থাকে ? শঙ্করের মনেও এ খটকা যে না জেগেছে তা নয়। সে আজই ওঠবার সময় মাঝে মাঝে ফিল্ড, গ্লাস দিয়ে ওপরের দিকে দেখবার চেষ্টা করেছে, কিন্তু ঘন মেঘে বা কুয়াশায় ওপরের দিকটা সৰ্ব্বদাই আবৃত থাকায় তার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সত্যিই তো, তারা কত উঠবে আর, সমতল খাজ যদি না পাওয়া যায় ? আবার নীচে নামতে হবে, আবার অন্য জায়গা বেয়ে উঠতে হবে । দফা সারা। সে বললে--ম্যাপে কি বলে ? আলভারেজের মুখ দেখে মনে হল ম্যাপের ওপর সে আস্থা হারিয়েছে। বললে—এ ম্যাপ অত খুটিনাটি ভাবে তৈরী নয়। এ পৰ্ব্বতে উঠেছে কে যে ম্যাপ তৈরী হবে ? এই ষে দেখছে—এখানা সার ফিলিপো ডি ফিলিপির তৈরী ম্যাপ, যিনি পটুগিজ পশ্চিম আফ্রিকার ফার্ডিনাণ্ডে পো শুঙ্গ আরোহণ করে খুব নাম করেন, এবং বছর কয়েক আগে বিখ্যাত পৰ্ব্বত আরোহণকারী পর্য্যটক ডিউক অফ আব্রুংসির অভিযানেও যিনি ছিলেন। কিন্তু রিখটারসভেল্ডে তিনি ওঠেন নি, এ ম্যাপে পাহাড়ের যে কনটুর আঁকা আছে, তা খুব নিখুত বলে মনে তে হয় না। ঠিক বুঝছি নে। হঠাৎ শঙ্কর বলে উঠল—ও কি ? তাবুর বাইরে প্রথমে একটা অস্পষ্ট আওয়াজ, এবং পরক্ষণেই একটা কষ্টকর কাশির শব্দ পাওয়া গেল—যেন থাইসিসের রোগী খুব কষ্টে কাতর ভাবে কাশছে। একবার-দুবার’ তার পরেই শব্দটা থেমে গেল। কিন্তু সেট। মাতুষের গলার শব্দ নয়, শোনবামাত্রই শঙ্করের সে কথা মনে হল । রাইফেল নিয়ে সে ব্যস্তভাবে তাবুর বার হতে যাচ্ছে, আলভারেজ তাড়াতাড়ি উঠে ওর হাত ধরে বসিয়ে দিলে। শঙ্কর আশ্চৰ্য্য হয়ে বললে—কেন, কিসের শব্দ ওটা ? কথা বলে আলভারেজের দিকে চাইতেই ও বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করলে আলভারেজের মুখ বিবর্ণ হয়ে গিয়েছে। শব্দটা শুনেই কি ! সঙ্গে সঙ্গে তাবুর অগ্নিকুণ্ডের মণ্ডলীর বাইরে নিবিড় অন্ধকারে একটা ভারী অথচ লঘুপদ জীব যেন বনজঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চলে যাচ্ছে বেশ মনে হল । দুজনেই খানিকটা চুপচাপ, তার পরে আলভারেজ বললে—আগুনে কাঠ ফেলে দাও। বন্দুক দুটাে ভরা আছে কি না দেখ। ওর মুখের ভাব দেখে শঙ্কর ওকে আর কোনো প্রশ্ন করতে সাহস করলে না। রান্ত্রি কেটে গেল । পরদিন সকালে শঙ্করেরই আগে ঘুম ভাঙল। তাবুর বাইরে এসে কফি করবার আগুন জালতে সে তাবু থেকে কিছুদূরে কাঠ ভাঙতে গেল। হঠাৎ তার নজর পড়ল ভিজে মাটির