পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চাদের পাহাড় ዓ¢ গিয়ে চিমানিমানি পৰ্ব্বতের শিলায় নাম খুদে রেখে যাবে। সে একজন বিশিষ্ট ভ্রমণকারী ও আবিষ্কারক। অত বড় হীরের খনি সে-ই তো খুজে বার করেছে! আলভারেজ মারা যাওয়ার পরে, সেই বিশাল অরণ্য ও পৰ্ব্বত অঞ্চলের গোলকধাঁধা থেকে সে একাই পার হতে পেরে এতদূর এসেছে! এখন সে নিরুপায়, অস্বস্থ, চলৎশক্তি-রহিত। তবুও সে যুঝছে, ভয় তো পায় নি, সাহস তো হারায় নি! কাপুরুষ, ভীরু নয় সে । জীবন-মৃত্যু তে অদৃষ্ঠের খেলা। না বঁাচলে তার দোষ কি ? 轟 豪 彎 দীর্ঘ রাত্রিকেটে গিয়ে পুর্বদিকে ফরসা হল। সঙ্গে সঙ্গে বন্য জন্তুর দল কোথায় পালালে। বেলা বাড়ছে, আবার নিৰ্ম্মম সূৰ্য্য জালিয়ে পুড়িয়ে দিতে শুরু করেছে দিকৃবিদিকৃ। সঙ্গে সঙ্গে শকুনির দল কোথা থেকে এসে হাজির। কেউ মাথার ওপর ঘুরছে, কেউ বা দূরে দূরে গাছের ডালে কি পাথরের ওপরে বসেছে। খুব ধীরভাবে প্রতীক্ষা করছে। ওরা যেন বলছে— কোথায় যাবে বাছাধন ? যে ক'দিন লাফালাফি করবে, করে নাও। আমরা বসি, এমন কিছু তাড়াতাড়ি নেই আমাদের! শঙ্করের খিদে নেই। খাবার ইচ্ছেও নেই। তবুও সে গুলি করে একটা শকুনি মারলে ! রৌদ্র ভীষণ চড়েছে। আগুন-তাতা পাথরের গায়ে পা রাখা যায় না। এ পৰ্ব্বতও মরুভূমির শামিল, খাদ্য এখানে মেলে না, জলও না। সে মরা শকুনিটা নিয়ে আগুন জেলে ঝলসাতে বসলো। এর আগে মরুভূমির মধ্যেও সে শকুনির মাংস খেয়েছে। এরাই এখন প্রাণধারণের একমাত্র উপায়, আজ ও খাচ্ছে ওদের, কাল ওরা খাবে ওকে। শকুনিগুলো এসে আবার মাথার ওপর জুটেছে। তার নিজের ছায়া পড়েছে পাথরের গায়ে, সে নির্জন স্থানে শঙ্করের উদভ্ৰাস্ত মনে ছায়াটা যেন আর একজন সঙ্গী মনে হল । বোধ হয়, ওর মাথা খারাপ হয়ে আসছে “কারণ বেঘোর অবস্থার ও কতবার নিজের ছায়ার সঙ্গে কথা বলতে লাগল-“কতবার পরক্ষণের সচেতন মুহূৰ্ত্তে নিজের ভুল বুঝে নিজেকে সামলে নিলে । সে পাগল হয়ে যাচ্ছে নাকি ? জর হয়নি তো ? তার মাথার মধ্যে ক্রমশ: গোলমাল হয়ে যাচ্ছে সব। আল্ভারেজ, হীরের খনি-পাহাড়, পাহাড়, বালির সমুদ্র.আভিলিও গাত্তি কাল রাত্রে ঘুম হয় নি” আবার রাত আসছে, সে একটু ঘুমিয়ে নেবে। কিসের শব্দে ওর তন্দ্র। ছুটে গেল। একটা অদ্ভূত ধরনের শব্দ আসছে কোন দিক থেকে। কোন পরিচিত শব্দের মত নয়। কিসের শব্দ ? কোন দিক থেকে শব্দটা আসছে তাও বোঝা যায় না। কিন্তু ক্রমশঃ কাছে আসছে সেটা । হঠাৎ আকাশের দিকে শঙ্করের চোখ পড়তেই সে অবাক হয়ে চেয়ে রইল।.তার মাথার ওপর দিয়ে আকাশের পথে বিকট শব্দ করে একটা জিনিস যাচ্ছে। ওই কি এরোপ্লেন ? সে বইয়ে ছবি দেখেছে বটে। এরোপ্লেন যখন ঠিক মাথার ওপর এল,-শঙ্কর চীৎকার করলে, কাপড় ওড়ালে, গাছের