পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

आग्नeijक z. ૨૧ পরিমিত ঘুলঘুলিপথে দৃশুমান, অৰ্দ্ধশায়িত অবস্থায় আমার দুটি চোখে দৃষ্টির প্রার সমতলে অবস্থিত ধূ-ধূ বিস্তীর্ণ সর্ধেক্ষেতের হলদে ফুলরাশি। এ দৃশুটা একেবারে অভিনব, আমি যেন একটা পৃথিবীজোড়া হলদে কার্পেটের উপরে শুইয়া আছি। হু-হু হাওয়ায় তীব্র ঝাঝালে সর্ষেফুলের গন্ধ । শীতও যা পড়িতে হয় পড়িয়াছিল। পশ্চিমে হাওয়ার একদিনও কামাই ছিল না, অমন কড়া রৌদ্র যেন ঠাণ্ড জল হইয়া যাইত কনকনে পশ্চিম হাওয়ার প্রাবল্যে। বইহারের বিস্তৃত কুল-জঙ্গলের পাশ দিয়া ঘোড়ায় করিয়া কিরিবার সময় দেখিতাম দূরে তিরাণী-চৌকার অনুচ্চ নীল পাহাড়-শ্রেণীর ওপারে শীতের স্বৰ্য্যস্ত। সারা পশ্চিম আকাশ অগ্নিকোণ হইতে নৈঋত কোণ পৰ্য্যন্ত রাঙা হইয়া যায়, তরল আগুনের সমুদ্র, হু-হু করিয়া প্রকাও অগ্নিগোলকের মত বড় স্বৰ্য্যটা নামিয়া পড়ে—মনে হয় পৃথিবীর আহ্নিক গতি যেন প্রত্যক্ষ করিতেছি, বিশাল ভূপৃষ্ঠ যেন পশ্চিম দিক হইতে পূৰ্ব্বে ঘুরিয়া আসিতেছে ; অনেকক্ষণ চাহিয়া থাকিলে দৃষ্টিবিভ্রম উপস্থিত হইত, সত্যই মনে হইত যেন পশ্চিম দিক্‌চক্রবাল-প্রাস্তের ভূপৃষ্ঠ আমার অবস্থিতি-বিন্দুর দিকে ঘুরিয়া আসিতেছে। রোদটুকু মিলাইয়া যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেজায় শীত পড়িত, আমরাও সারাদিনের গুরুতর পরিশ্রম ও ঘোড়ায় ইতস্তত ছুটাছুটির পরে সন্ধ্যাবেল প্রতিদিন আমার খুপড়ির সামনে আগুন জালিয়া বসিতাম। সঙ্গে সঙ্গে অন্ধকারাবৃত বনপ্রাস্তরের উদ্ধাকাশে অগণ্য নক্ষত্ৰলোক কত দূরের বিশ্বরাজির জ্যোতির দূতরূপে পৃথিবীর মানুষের চক্ষুর সম্মুখে দেখা দিত। আকাশে নক্ষত্ররাজি জ্বলিত যেন জলজলে বৈদ্যুতিক বাতির মত—বাংলা দেশে অমন কৃত্তিক, অমন সপ্তর্ষিমণ্ডল দেখি নাই । দেখিয়া দেখিয়া তাহীদের সঙ্গে নিবিড় পরিচয় হইয়া গিয়াছিল। নীচে ঘন অন্ধকার বনানী, নির্জনতা, রহস্যময়ী রাত্রি, মাথার উপরে নিত্যসঙ্গী অগণ্য জ্যোতিলেণক । একএকদিন এক ফালি অবাস্তব চাদ অন্ধকারের সমুদ্রে মুদুর বাতিঘরের আলোর মত দেখাইত। আর সেই ঘনকৃষ্ণ অন্ধকারকে আগুনের তীক্ষ তীর দিয়া সোজা কাটিয়া এদিকে ওদিকে উল্কা খসিয়া পড়িতেছে। দক্ষিণে, উত্তরে, ঈশানে, নৈঋতে, পূৰ্ব্বে, পশ্চিমে, সবদিকে। এই একটা, ওই একটা, ওই ছুটে, এই আবার একটা—মিনিটে মিনিটে, সেকেণ্ডে সেকেণ্ডে । এক-একদিন গনোরী তেওয়ারী ও আরও অনেকে তাবুতে আসিয়া জোটে। নানা রকম গল্প হয়। এইখানেই একদিন একটা অদ্ভূত গল্প শুনিলাম। কথায় কথায় সেদিন শিকারের গল্প হইতেছিল। মোহনপুরা জঙ্গলের বন্ত-মহিষের কথা উঠিল। দশরথ সিং ঝাণ্ডাওয়ালা নামে এক রাজপুত সেদিন লবটুলিয়া কাছারিতে চরির ইজারা ডাকিতে উপস্থিত ছিল। লোকটা এক সময়ে খুব বনে-জঙ্গলে ঘুরিয়াছে, দু'দে শিকারী বলিরা তার নাম আছে। শৰ ঝাণ্ডাওয়ালা বলিল—হজুর, ওই মোহনপুরা জঙ্গলে বুনো মহিষ শিকার করতে আমি একবার টাড়বারো দেখি । মনে পড়িল গন্থ মাহীতে একবার এই টাড়বারোর কথা বলিয়াছিল বটে। বলিলাম— दि. ब्र. ¢-१ 8