পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত ২৩৭ মণ মাল আমার বিদ্যে + গঙ্গাচরণ সন্ধ্যার অন্ধকারে চিস্তান্বিত মনে বাড়ীর পথে চললো । নবীন পাড়ই সঙ্গেই ছিল, তাকে যেতে হবে দোমোহানী, নতুন গায়ের পাশেই। বললে— পণ্ডিত মশাই ছেলেন তাই আজ বাচকাচের মুখে দু'টো দানা পড়বে। মোদের কথা ওসব বড় দোকানদার কি শোনে! মোরা হলাম টিকরি মানুষ। কাল দু’টো মাছ পেটিয়ে দেবো আনে। গঙ্গাচরণ বাড়ী নেই, পাঠশালায় গিয়েচে পড়াতে। হাবু ও পটল বাপের সঙ্গে পাঠশালায়। এক অনঙ্গ-বেী রয়েছে বাড়ীতে। কে এসে ডাক দিলে—ও পণ্ডিত মশাই—বাড়ীতে আছে গা— · অনঙ্গ-বেী কারো সামনে বড় একটা বার হয় না। বৃদ্ধ ব্যক্তি ভাকাডাকি.করচে দেখে দোরের কাছে এসে মৃদুস্বরে বললে—উনি বাড়ী নেই। পাঠশালায় গিয়েচেন— —কে ? মা-লক্ষ্মী ? অনঙ্গ সলজ্জ ভাবে চুপ করে রইল। বৃদ্ধটি দাওয়ায় উঠে বসে বললে—আমার একটু খাবার জল দিতি পারব মা-লক্ষ্মী ? অনঙ্গ তাড়াতাড়ি ঘরের মধ্যে ঢুকে এক ঘটি জল নিয়ে এসে রাখলে। তারপর বাড়ীর গামছাখানা বেশ করে ধুয়ে ধটির ওপর রেখে দিলে। একটু আখের গুড় ও এক মাস জলও নিয়ে এল । বললে—দুকোষ কাটাল দেবো ? —খাজা না রসা ? —আধখাজা । এখন শ্রাবণ মাসে রসা কাটাল বড় একটা থাকে না । —দাও, নিয়ে এসো—ম, একটা কথা— —কি বলুন ? —আমি এখানে দু’টো থাবো। আমি ব্রাহ্মণ। আমার নাম দীনবন্ধু ভট্টাচাৰ্য্য। বাড়ী কামদেবপুরের সন্নিকট বাসান-গ। অনঙ্গ-বে বললে—খাবেন বই কি। বেশ, একটু জিরিয়ে নিন। ঠাই করে দি– একটু পরে দীক্ষ ভট্চাজ মোট আউশ চালের রাঙা রাঙা ভাত, ঢেঁড়শ ভাজা, বেগুন ও শাকের ডাটাচচ্চড়ি দিয়ে অত্যন্ত তৃপ্তির সঙ্গে খাচ্ছিল । অনঙ্গ-বেী বিনীতভাবে সামনে দাড়িয়ে আছে । দীক্ষ খেতে খেতে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে যেন একটু দম নিলে। তারপর বললে—ম-লক্ষ্মীর রান্না যেন অমর্তে ৷ চচ্চড়ি আর একটু দাও তো ? অনঙ্গ লজ্জ কুষ্ঠিত স্বরে বললে—আর তো নেই ? টেডুল ভাজা দুখান দেবো ? —তাই দাও মা । এত বৃদ্ধ লোক যে এতগুলো ভাত এক নিঃশ্বাসে খেয়ে ফেলতে পারে, অনঙ্গ-ৰেী নিজের