পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ]ণ-লংকে৩ כ9\אי নেতু বুনের ছোট মেয়েট তে ধড়ফড় করে মরে গেল পেটের অমুখে । —বলিস কি মতি ? —আর বলবো কি। অত বড় মুচিপাড়া ভেঙে গিয়েচে দিদি-ঠাকরুণ । —কে কোথায় চলে গেল ! না খেয়ে কদিন থাকা যায় বলুন ? যার চোক যেদিকে যায় বেরিয়ে পড়েচে । আমার ভাই দুটো, অমন জোয়ান ভাইপো দুটো না খেয়ে খেয়ে এমনি খ্যাংরা কাটি—তারপর কোন দিকি যে তার চলে গেল তা জানি নে । আহা, অমন জোয়ান দুই ভাইপো –আর এই স্তাখে আমার শরীল— হাত দুটাে বের করে দেখিয়ে মতি মুচিনী হাউ-হাউ করে কেঁদে উঠলো । অনঙ্গ-বে তাড়াতাড়ি ওর কাছে গিয়ে বললে—কাদিস নি মতি। জল খা, একটু গুড় দি। ভাত দেবো । ক’দিন থাস নি ? মতি ছ’হাতের আঙুল ফাক করে বললে—সাত দিন। শেষ পৰ্য্যন্ত মতি মুচিনীর অবস্থা অনঙ্গ-বেয়ের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিলে। না খেয়েও তাহলে মানুষ কষ্ট পায়, নয় তো ভাতছালার অতগুলো মুচির অবস্থা আজ এরকম হোল কি করে ? এই অসময়ে আবার একদিন এসে পড়লো কামদেবপুরের দুর্গ পণ্ডিত। সেদিন অনঙ্গ-বেী দুটাে মুষনি শাক তুলে এনেচে নোনাতলার জোল থেকে, সে যেন এক পরম প্রাপ্তি। খুব বেলা গেলে কীপালীদের ছোট-বোঁ সেদিন ডাকলে—ও বামুন-দিদি, চলো এক জায়গায়— —কোথায় রে ছুটকি : - নোনীতলার জোলে— —কেন রে, এত বেলা গেলে নেনাতলার জোলে ? তোর নাগর বুঝি কুকিয়ে তোর সঙ্গে দেখা করবে ? —আ মরণ বামুন-দিদির। সোয়ামী অাছে না আমার ? অমন বুঝি বলতি আছে সোয়ামী যাদের আছে তাদের ? তোমরা রূপসী-বোঁ, তোমাদের নগর থাকুক, আমার দিকি কে তাকাবে তোমরা থাকতি ? তা মণ গে—মুষনি শাক হয়েচে অনেক, মুকিয়ে তুলে আনি চলো। কেউ এখনো টের পায় নি। টের পেলে আর থাকবে না। নোনাতলার জোল গ্রামের পেছন দিকের বঁাশবন আমতলার পেছনে ঘন ঝোপে ঘেরা জায়গা। বর্ষাকালে নিচু জায়গাতে জল বাধে—এখন জল নেই—শরতের শেষে জলাশয় শুকিয়ে উঠচে। ভিজে মাটির ওপর নতুন স্বযনি শাক এক রাশ গজিয়েচে দেখে অনঙ্গ-বেয়ের মুখে হাসি ধরে না। বললে—এ যে ভাই অনেক। কপালী-বোঁ হাসতে হাসতে বললে—একেই বলে কাঙলৈকে শাকের ক্ষেত দেখানো ! —ত হোক, কারো চুরি তো করচি নে।