পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত રીઝ છે —গিয়েছিলেন কোথায় ? --নিবারণের বাড়ী, ও গায়ের নিবারণ ঘোষ। —বাবাঠাকুরের পুটুলিতে কি ? চাল ? —হঁ্যা বাপু । —ঢেকে রাখুন। এসব দিকে বড় আকাল। এখুনি এসে ঘ্যান ঘ্যান করবে সবাই। গঙ্গাচরণ বসে থাকতে তিন-চারটি দুলে বাগদি জাতীয় স্ত্রীলোক এসে আঁচলে বেঁধে কলাই নিয়ে গেল। একজন নিয়ে গেল অপকৃষ্ট পাতা চা ও একটা ছোট পাথরবাটিতে একবাটি গুড় । দোকানী বললে—বমুন ঠাকুরমশায়— —না বাপু, আমি যাবে অনেক দূর, উঠি। —না, একটু চা খেয়ে যেতেই হবে। আর তো কিছু দেওয়ার নেই, বসুন— —চা খাবো আবার— —হঁ্য, একটুখানি খেয়ে যান দয়া করে। — আরও পাচ-ছাট খদের দোকানে এল গেল। সকলেই নিয়ে গেল কলাই। শুধু কলাই, আর কিছু নয়। চা একটু পরে তৈরি হয়ে এল, একটা কাচের মাসে করে দোকানী ওকে চ দিলে। গঙ্গাচরণ লক্ষ্য করলে দোকানের মধ্যে তাকে, মেজের ওপর, নানা জায়গার পেতল কাসার বাসন থরে থরে সাজানে! বেশির ভাগ থালা আর বড় বড় জাম বাটি। গঙ্গাচরণ ব্যাপারটা বুঝতে পারলে না, এরা কি কাসারি ? বাসন বিক্রির জন্তে কেন এত ? দোকানী আবার তামাক সাজলে । গঙ্গাচরণের মনের কথা বুঝতে পেরে বললে—ও বাসন অত দেখচেন, ওসব ধো দিয়ে গিয়েচে লোকে। এ গায়ে বেশির ভাগ দুলে বাগদি আর মালো জাতের বাস। নগদ পয়সা দিতি পারে না, ওই সব বাসন বাধা দিয়ে তার বদলে কলাই নিয়ে যায়। —সবাই কলাই খায় ? —তা ছাড়া কি মিলবে ঠাকুরমশায়। ওই খাচ্ছে— —তোমার চাল নেই ? —না ঠাকুরমশায় । —আমি দাম দেবো, সত্যি কথা বলে । নগদ দাম দেবো। —না ঠাকুরমশায়। হাত জোড় করে বলচি ও অনুরোধ করবেন না ? —তোমরা কি খাও বাড়ীতে ? —মিথ্যে কথা বলবে না, ভাত চার আনা, কলাই বারো আনা । ডাটা শাক দুটো করেলাম বাড়ীতে, তা সে রাখবার উপায় নেই। দিনমানেই ক্ষেতে লোকজন মেয়েছেলে, খোকাখুকীর ঢুকে গোছা গোছা উপড়ে নিয়ে যাচ্চে। সাবাড় করে দিয়েচে সব। কিছু রেখে খাবার জো নেই। চালকুমড়ে। ফলেছিল গোটাকতক এই দোকানের চালে, কে তুলে