পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵՀ বিভূতি-রচনাবলী নিয়ে গিয়েচে । গঙ্গাচরণ তামাক খাওয়া সেরে ওঠবার যোগাড় করলে। দোকানী বললে—ঠাকুরমশায়, কলাই নেবেন ? —the —নিয়ে যান সেরখানেক । এর দাম আপনাকে দিতে হবে না। অার একটা জিনিস– দীডান, গোটকতক পেয়ার দিই নিয়ে যান, আমার গাছের ভালো পেয়ারা—তাও আর কিছু নেই সব পেড়ে নিয়ে গেল ওরা । আমি ভাসা দেখে দশ-বারোটা জোর করে কেডে নিয়ে রেখেছিলাম । গঙ্গাচরণ বাড়ী পৌছে দেখলে অনঙ্গ-বেী চুপ করে শুয়ে আছে। এমন সময়ে সে কখনো শুয়ে থাকে না । —গঙ্গাচরণ জিজ্ঞেস করলে—শুয়ে কেন? শরীর ভালো তো ? দেখি— অনঙ্গ-বেী যন্ত্রণাকাতর হয়ে বললে—কাউকে ডাকো । —কাকে ডাকবো ? —কাপালীদের বড-বেীকে ডাকো চট করে। শরীর বডড খারাপ । গঙ্গাচরণ বড় ছেলেকে বললে-দৌড়ে যা কাপালী-বাড়ী-বলগে এক্ষুণি আসতে হবে। মীর শরীর খারাপ— অনঙ্গ-বেী যন্ত্রণায় চীৎকার করতে লাগলো, কখনো ওঠে কখনো বসে। যুপবদ্ধ আৰ্ত্ত পশুর মত চীৎকাব। গঙ্গাচরণ নিরুপায় অবস্থায় বাইরের দাওয়ায় বসে তামাক টানতে লাগলো। তখন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েচে, আকাশে পঞ্চমী তিথির এক ফালি চাদও উঠেচে। বিঝি ডাকচে লেবু-ঝোপে। গঙ্গাচরণ আর সহ করতে পারচে না অনঙ্গ-বৌয়ের চীৎকার। ওর চোখে প্রায় জল এল । ততক্ষণে বাড়ীর মধ্যে আশপাশের বাড়ীর মেয়েছেলে এসে গিয়েচে । ওদের মধ্যে একজন বর্ষীয়সীকে ডেকে গঙ্গাচরণ উদভ্ৰান্ত মুরে জিজ্ঞেস করলে—ই্য দিদিম, বলি ও অমন করছে কেন ? ঠিক সেই সময় একটা যেন মৃদু গোলমাল উঠলো। একটি শিশু কণ্ঠের ট্যা-ট্যা কান্না শোনা গেল। বর-কয়েক শশক বেজে উঠলো। সতীশ কাপালীর মেয়ে বিন্দি বাড়ীর ভেতর থেকে ছুটে এসে বললে—ও দাদাবাবু, বৌদিদির খোকা হয়েচে—এখন সন্দেশ বের করুন আমাদের জন্তে-দিন টাকা গঙ্গাচরণের চোখ বেয়ে এবার সত্যিই ঝর ঝর করে জল পড়লো । তার পর দিনকতক সে কি কষ্ট। প্রস্তুতিকে খাওয়ানোর কি কষ্ট। না একটু চিনি, ন আটা, না মিছরি। অনঙ্গ-বেী শুয়ে থাকে, নবজাত শিশু ট্যা-ট্যা করে কাদে, গঙ্গাচরণ