পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত ২৮৭ ফিরতেই অনঙ্গ-বেী ক্ষীণশ্বরে বললে—ওগো, এলে ? এদিকে এসো। -८कभन श्रोझ ? —এখানে বোসে । কোথায় গিইছিলে এতক্ষণ ? কতক্ষণ যেন দেখি নি— —টাউনে গেলাম তো । তোমাকে বলেই তো গেলাম। জিনিস-পত্র নিয়ে এলাম সব । অনঙ্গ নিস্পৃহ, উদাস মুরে বললে—বোসে এখানে। সারাদিন টাে টাে করে বেড়াও কোথায় ? তোমায় একটুও দেখতে পাই নে। গঙ্গাচরণের মনে বড় কষ্ট হোল ওকে দেখে। বড় দুৰ্ব্বল হয়ে পড়েচে অনঙ্গ-বে। এমন ধরণের কথাবার্তা ও বড় একটা বলে না। এ হোল দুৰ্ব্বল রোগীর কথাবার্তা । অনাহারে শীর্ণ, দুৰ্ব্বল হয়ে পড়েচে, কতকাল ধরে পেট পুরে খেতে পেতে না, কাউকে কিছু মুখ ফুটে বলা ওর স্বভাব নয়, কত সময় নিজের বাড়া ভাত অপরকে খেতে দিয়েচে । শরীর সে সবের প্রতিশোধ নিচ্চে এখন। গঙ্গাচরণ সস্নেহে বললে—তুমি ভাল হয়ে ওঠে। তোমাকে জোড়া সন্দেশ এনে খাওয়াবো টাউন থেকে । হরি ময়রা যা সন্দেশ করেচে। দেখলে খেতে ইচ্ছে করে । অনঙ্গ-বেী জাতুদ থেকে বেরিয়েচে, কিন্তু বড় দুর্বল, শীর্ণদেহ। খেতেই পায় না তা সারবে কোথা থেকে । গঙ্গাচরণ প্রাণপণে চেষ্টা করে খাবারের এটা সেটা যোগাড় করতে, কিন্তু পেরে ওঠে না। একটু ঘি কত কষ্টে গঙ্গানন্দপুরের শশী ঘোষের বাড়ী থেকে যোগাড় করে নিয়ে এল। তাও ঘোষমশায় আট টাকা সেরের কমে ছাড়তে চায় না। ব্রাহ্মণত্বের দোহাই দিয়ে অনেক করে বিটুকু যোগাড় করা। ঘি যদি বা মেলে দূর গ্র , নিজ গ্রামে না মেলে একটু দুধ, না একটু মাছ। অনঙ্গ-বেী বললে—ওগো, তুমি টো টাে করে অমন বেড়িও না । তোমার চেহারাটা খারাপ হয়ে গিয়েচে । আয়নায় মুখখানা একবার দেখো তো— গঙ্গাচরণ বললে—দেখা আমার আছে। তুমি ঠাও। হও তো। -एँ । অনঙ্গ-বেী আঁতুড় থেকে বেকলেও নড়তে চড়তে পারে না—শুয়েই থাকে। রান্না করে গঙ্গাচরণ ও হাৰু। পাঠশালা আজকাল সবদিন হয় না। বিশ্বাসমশায় এখান থেকে সরে যাওয়াতে পাঠশালার অবস্থা ভাল নয়। এ দুর্দিনে আকস্মিক বিপৎপাতের মত দুর্গ ভট,চাষ একদিন এসে হাজির । গঙ্গাচরণ পাঠশালাতে ছেলে পড়াচ্চে । —এই যে পণ্ডিতমশায় ! 4. গঙ্গাচরণ চমকে গেল। বললে—আসুন, কি ব্যাপার ?