পথের পাঁচালী se পিছনে আর চায় পাঁচটি ছেলেমেয়ে সম্মুখ দরজা দিয়া বাড়ী ঢুকিল। সেজ-ঠাকুরুণ কোনো দিকে না। চাহিয়া বাড়ীয় কাহারও সহিত কোনো আলাপ না করিয়া সোজা হন হন করিয়া ভিতরের দিকের রোয়াকে উঠিলেন। নিজের ছেলের দিকে ফিরিয়া বলিলেন-কৈ নিয়ে আয়-বের কত্ব পুতুলের বাক্ষ্ম, দেখি এ বাড়ীর কেহ কোনো কথা বলিবার পূর্বেই টুক্ত ও সন্তু, দুজনে মিলিয়া দুৰ্গার টিনের পুতুলের বাক্সটা ঘন্ধ হইতে বাহির করিয়া আনিয়া রোয়াকে নামাইল এবং টুকু বান্ধ খুলিয়া খানিকটা খুজিবার পর একছড়া পুতির মালা বাহির করিয়া বলিল-এই স্থাখো মা, আমার সেই মালাটা-সেদিন যে সেই খেলতে গিয়েছিল, সেদিন চুরি করে এনেচে। সতু বাক্সের এক কোণ সন্ধান করিয়া গোটকতক আমের গুটি বাহির করিয়া বলিল--এই দ্যাথো জেঠিম, আমাদের সোনামুখী গাছের আমি পেড়ে এনেছে। ব্যাপারটা এত হঠাৎ হইয়া গেল বা ইহাদের গতিবিধি এ বাউীয় সকলের কাছেই এত রহস্যময় মনে হইল যে এতক্ষণ কাহারও মুখ দিয কোন কথা বাহির হয় নাই। এতক্ষণ পৱে সৰ্ব্বজয়া কথা খুজিয়া পাইয়া বলিল-কি, কি খুড়ীমা ? কি হয়েছে ? পরে সে রান্নাঘরের দাওয়া হইতে স্বাগ্ৰসাবে উঠিয়া আসিল । এই স্থাখো না কি হবেচে, কীৰ্ত্তিখানা স্থাখো না একবার-তোমার মেয়ে সেদিন খেলতে গিযে টুক্তর পুতুলের বাক্স থেকে এই পুতির মালা চুরি করে নিয়ে এসেচে-মেয়ে কদিন থেকে খুঁজে খুঁজে হাফরান। তারপর সন্ত গিযে বললে যে, তোর পুতির মালা দুগগ্ৰাদিদির বাক্সের মধ্যে দেখে এলাম-কৃষ্ঠাখে একবার কাণ্ড-তোমার ও মেযে কম নাকি ? চোর-চোরের বেহদা চোর-আল্প। ওই দ্বাখো না-বাগানের আমগুলো গুটি পড়তে দেরি সন্য না-চুরি করে নিয়ে এসে বাক্সে লুকিয়ে রেখেচে । যুগপৎ দুই চুরির অতর্কিততায় আড়ষ্ট হইয়া দুৰ্গা পাচিলের গায়ে ঠেস দিয়া দাড়াইয়া ঘামিতেছিল। সৰ্ব্বজয়া জিজ্ঞাসা করিল--এনিছিল। এই মালা ওদের বাড়ি থেকে ? দুৰ্গা কথাৰ উত্তর দিতে না দিতে সেঙ্গী-বোঁ বলিলেন,--না। আনলে কি আর মিথ্যে করে বলচি নাকি ! বলি এই আমি কটা স্থাখে। না ? সোনামুখীর আমি চেন না কি ? এও কি মিথ্যে ቆግ] ? সৰ্ব্বজয়া অপ্ৰতিভ হইয়া বলিল-না। সেজখুড়ী, আপনার মিথ্যে কথা তা তো বলিনি। আমি ওকে জিগ্যেস করাচি । সেজ-ঠাক্কণ হাত নাডিয়া বঁাজের সহিত বলিলেন-জিগ্যেস কবো। আর যা করো বাপু, ও মেয়ে সেন্ধু মেয়ে হবে না। আমি বলে দিদি –এই বয়সে যখন চুরি বিচ্ছে ধরেছে, তখন এর পর যা হবে সে টেরই পাবে। চলরে সতু-নে আমের গুটিগুলো বেঁধে নৌ-বাগানেন্ম আমগুলো লকিছাড়া দুড়ীয় জালায় যদি চোখে দেখবার জো আছে! টুল, মালা নিইচিল। তো ? সৰ্ব্বজয়াৱ কি জানি কেমন একটু য়াগ হইল-কাগড়াতে সে কিছু পিছু হটবার পাত্র নয়,
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/১০০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।