পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথের পাঁচালী tఫీ ভবভূতিও তাঁহাদের সৃষ্টিকৰ্ত্ত নহেন। কেবল অতীত দিনের কোনো পাখীভাকা গ্ৰাম্য সন্ধ্যায় এক মুখমতি গ্ৰাম্য বালকের অপরিণত শিশু-কল্পনায় দেশে তাহারা ছিল বাস্তব, একেবারে খাটি, অতি স্বপরিচিত। পৃথিবী-পৃষ্ঠে ঘাঁহাদের ভৌগোলিক অস্তিত্ব কোনোকালে সম্ভব ছিল না, শুধু এক অনভিজর শৈশবমনেই সে কল্পজগতের প্রস্রবণ-পৰ্ব্বত তাহােয় সতত-সঞ্চারমাণ মেঘজালে ঢাকা নীল শিখরমালার স্বপ্ন লিষ্টয়া অক্ষয় আসন পাতিয়া বসিল । পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ দুৰ্গা ভাইকে খুজিতে বাহির হইয়াছিল। পাড়ায় নানাস্থানে খুজিয়া কোথাও পাইল না। অন্নদা রায় মহাশয়ের বাড়ীর কাছে আসিয়া ভাবিল—একবার এখানে দেখে যাই, খুড়ীমার সঙ্গেও দেখাটা হবে এখন অন্নদা রায়ের বাড়ী ঢুকিতেই একটা হৈ হৈ চীৎকার ও কান্নাকাটির কলরব তাহার কানে গেল। খাড়ীর মধ্যে ঢুকিয়া সে দরজার কাছে দাঁড়াইল । স্নোয়াকের একপাশে দাড়াইয়া অন্নদা রায়ের বিধবা ভগ্নী সখী ঠাকৃষ্ণণ চীৎকার করিয়া বাড়ী ফাটাইতেছেন :- —তাই কি মনে একটু ভয় আছে। নাকি ? ঢের ঢের জাহাবাজ মেয়েমানুষ দেখিছি, এমন আর কক্ষনো দেখিনি রে বাপু, পায়ে গড় করি-বলে ঐ ঘমের মত সোয়াধী, রাগলে হাড়ে মাসে এক রাখে না-তাই না হয় বাপু, একটু সমূবে চলি ? সত্যিই তো, আজি তিন দিন ধরে বলচে ধানগুলো একটু রোদে দাও, ওগো ধানগুলো একটু রোদে দাওকথা কি গোৱাহি হয় নাকি ? না, কানো যায় ? কার কথা কে শোনে ! গোৱন্ত ঘরের বেী ধান ভানবে, কাজ করবে। এই জানি-ত না, বুদ্দিন পটের বিবি সেজে বলে আছে - 'পটের বিবি” জিনিসটি পরিস্ফুট করিবার জন্ত উত্তম্বৰূপ সাজিয়া যেরূপ ভাবে বসিয়া থাকা উচিত বলিয়া সখী ঠাকুরুণের ধারণা তিনি এখানে তাহার অভিনয় করিলেন-এ তো বাপু কখনো কোথাও বাপের জন্মে দেখিনি, শুনিওনি--- দালানের মধ্য হইতে অন্নদা রায়ের পুত্রবধু নাকীমারে কঁাদিতে কঁাদিতে বলিল-পােটর বিবি হয়ে সেজে বলে থাকি নাকি! কাল যে দশ সের যুগের ভাল ভাজালাম সায়া বিকেল ধরে ? দুপুর বেলা খেয়েই আয়ন্ত করিচি, আর যখন পাঁচটায় গাড়ী যাওয়ার শব্দ পেলাম তখনও খোলার তাতেই বসে আছি, দু-ধামা গুলি ভাজা ৱে, ভাঙা রো-ক’য়ে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে তখন উঠিচি-সে কি আমনি হয়? গা-গতর ব্যথা হয়ে গেচে, রাত্তিরে বলি বুঝি জয় হোল, এমনি গায়ে-হাতে ব্যথা-তা কি কেউ স্থাখে? তার ওপর সকাল বেল বিনি দোষে এই মান্ব-কেন, সংসারে কি বলে বলে খাই ? এমন সময় অন্নদা ৱায়েয় ছেলে গোকুল এক হাতে একখান কঁচা বঁাশের পাতায়বদ্ধ ভাগ ও অন্ধ এক হাতে দা লইয়া বাড়ী চুকিল। শ্ৰীৱ কায়ার শেষ অংশ শুনিতে পাইয়া