呕领邻下柠 Dy পড়িল, তাহার দামী বিলাতী আলোটা মেজেতে বসানো। উহার কাচের ভুমটা ভাঙিয়া চুরমার হইয়াছে, সারা মেজেতে কঁাচ ছড়ানো। দোরের কাছে জুতার শব্দ পাইয়া গোকুলের স্ত্রী চমকাইয়া পিছন ফিরিয়া চাহিল, সে আঁচল পাতিয়া মেজে হইতে কঁাচের টুকুৱাগুলি খুটিয়া খুটিয়া তুলিতেছিল,-ভাবে মনে হয় প্রতিদিনের মত ঘর পরিষ্কার করিতে আসিয়া আলোটি জালিতে গিয়াছিল, কি করিয়া ভাণ্ডিয়া ফেলিয়াছে, এবং আলোর মালিক আসিবার পূর্বেই নিজেই অপরাধের চিহ্নগুলি তাড়াতাড়ি সরাইয়া ফেলিবার চেষ্টায় ছিল হঠাৎ বামাল ধরা পড়িয়া অত্যন্ত অপ্ৰতিত হইল। ক্ষতিকারিণীর লজ্জার ভারটা লঘু করিয়া দিবার জন্তই নীরেন হাসিয়া বলিয়া উঠিল—এই ষে বৌদি, আলোটা ভেঙে ব’সে আছেন বুঝি ? এই দেখুন ধরা পড়ে গেলেন, জানেন তো আইন পড়ি। আচ্ছা এখন একটু চা ক’রে নিয়ে আনুন তো বৌদি, চাটু করে, দেখি কেমন কাজের লোক। দাঁড়ান, আলোটা জেলে নিই, ভাগ্যিাস বাক্সে আর একটা ডুম্ আছে! গোকুলের স্ত্রী। সলজ স্বরে বলিল, দেশলাই আনবো ঠাকুরপো ? নীরেন কৌতুকের সুরে বলিল-দেশলাই আনেন নি। তবে আলো পেড়ে কি করছিলেন নানি ? বধু এবার হাসিয়া ফেলিল, নিয়ম্বরে বলিল-স্কুল পড়ে রয়োচে, ভাবলুম একটু মুছে দিই, তা যেমন কঁচটা নামাতে গেলাম কি জানি ও সব ইংরিজি কলের আলো-কথা শেষ না করিয়াই সে পুনরায় সলজ হাসিয়া নীচে পলাইল । নীয়েন দৃশ বারো দিন আসিয়াছে বটে, সম্পর্কে বৌদিদি হইলেও গোকুলের স্ত্রীর সঙ্গে তাহার বিশেষ আলাপ হয় নাই। কঁাচ ভাঙার সন্ধ্যা হইতে কিন্তু উভয়ের মধ্যে নূতন পরিচয়ের সঙ্কোচটা কাটিয়া গেল । নীরেন অবস্থাপন্ন পিতার পুত্র, তাহার উপর বাংলাদেশের পাড়াগাঁয়ে এই প্ৰথম আসা, নিঃসঙ্গ আনন্দহীন প্রবাসে দিনগুলি কাটিতেছিল না ! সমবয়সী বৌদির সহিত পরিচয়ের পথটা সহজ হইয়া যাওয়ার পর হইতে সকাল-সন্ধ্যায় চা-পাণেশ্ন সময়টি, সহজ থআদানপ্রদানের মাধুৰ্য্যে আনন্দপূর্ণ হইয়া উঠিল!-- দুপুরে সেদিন দুৰ্গা বেড়াইতে আসিল। রান্নাঘরের দুয়ারে উকি মারিয়া বলিল-কি রাধাচো ও খুড়ী মা ? বন্ধু বলিল-আয় মা আয়, একটু কাজ ক’রে দিবি? একা আর পেরে উঠটিনে।--দুৰ্গা মাঝে মাঝে যখনই আসে, খুড়ীমার কার্ধ্যে সাহায্য করে। সে মাছ কুটিতে কুটিতে বলিল-ই খুড়ীমা, এ কঁকড়া কোথায় পেলে ? এ কঁকড়া তো খায় না। --কেনি খাবে না রে, দুগ্ধ! বিধু জেলেনী ব’ :- গেল এ কাঁকড়া সবাই খায়। -হ্যা খুড়ীমা, ওমা সেকি, একি তুমি কিন্লে ? -কিনালামই তো, ওই অতগুলো পাঁচ-পয়সায় দিয়েচে বিধু। দুর্গ কিছু বলিল না। মনে মনে ভাবিল-খুড়ীমার আর সব ভাল, কেবল একটু বোকা । এ কঁকড়া আবায় পয়সা দিয়ে কেনেই বা কে, খায়ই বা কে ? ভালমাড়ব পেয়ে বিধু ঠকিয়ে
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।