পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS বিভূতি-রচনাবলী চান্ধটি চুরুট সে ফেলিয়াও দিতে পারে নাই, নেড়ায় অষ্ট্ৰীপতির নিকট সংগৃহীত একটা খালি চুক্লটের বাক্সে সে-কয়টি সেওই পোড়োভিটের জঙ্গলে ভাঙাপাচিলের ঘুলঘুলিতে লুকাইয়া রাখিয়া দিয়াছে। প্ৰথম চুরুট খাইবার দিন চুরুট টানা শেষ হইয়া গেলে তয়ে তাহার বুকের মধ্যে কেমন করিয়া উঠিতেছিল, পাছে মুখের গন্ধে মা টের পায়। পাকা কুল অনেক কবিয়া খাইয়া নিজের মুখের হাই হাত পাতিয়া ধরিয়া অনেকবার পরীক্ষা করিয়া। তবে সে সেদিন পুনৰ্বার মনুষ্যসমাজে প্রবেশ করিয়াছিল। যায় বুঝি আজ বামালম্বন্ধ ধরা পড়িয়া! কিন্তু দিদিৱ পাচিলের ওপিঠে যাইবার দরকার হয় না। এপিঠেই কাজ। সারা হইয়া যায়। একবিংশ পরিচ্ছেদ কথাটা সৰ্ব্বজয়া ঘাটে গিয়া পাড়ার মেযেদের মুখে শুনিল । আজ কয়েকদিন হইতে নীয়েনের সঙ্গে অন্নদা রায়ের, বিশেষ করিষা উঠাহার ছেলে গোকুলের মনান্তর চলিতেছিল। কাল দুপুর বেলা নাকি খুব ঝগড়া ও চেঁচামেচি বাধে। ফলে কাল রাত্ৰেই নীরেন জিনিসপত্র লইয়া এখান হইতে চলিয়া গিয়াছে। অন্নদা রায়ের প্ৰতিবেশী যজ্ঞেশ্বর দীঘড়ীয় স্ত্রী হরিমতি বলিতেছিলেন--সত্যি মিথ্যে জানিনে, ক’দিন থেকে তো নানারকম কথা শুনতে পাচ্ছি-আমি বাপু বিশ্বোস করিনে, বৌটা তেমন নয়। আবার নাকি শুনলাম নীরেন লুকিয়ে টাকা দিয়েছে, বোঁ নাকি টাকা কোথায় পাঠিয়েছিল, নীয়েনের হাতের লেখা রশিদ ফিরে এসে গোকুলের হাতে পড়েচে এই সব -যাক বাপু, সে সব পরের কুচ্ছ শুনে কি হবে? নীরেন শুনুলাম বলচে-আপনারা সকলে মিলে একজনের ওপর অত্যাচার কর্তে পারেন, তাতে দোষ হয় না ?--আপনারা যা ভাবেন ভাবুন, বৌ ঠাকৃঙ্কণ একবার হুকুম করুন। আমি ওঁকে এই দণ্ডে আমার হায়ানো মাযের মত মাথায় ক’রে নিয়ে যাবে-তারপর আপনার যা করবার করবেন। তারপর খুব হৈ চৈ খানিকক্ষণ হোল-সন্দের আগেই সে গল্পলাপাড়া থেকে একখানা গাষ্ঠী তেকে আনলে, জিনিস-পত্তার নিয়ে চলে গেল । সৰ্ব্বজয় কথাটা শুনিয়া বড় দুমিয়া গেল। ইতিমধ্যে স্বামীকে দিয়া অন্নয়া রায়কে নীয়েনের পিতার নিকট এ বিবাহ সম্বন্ধে পত্র লিখিতে অনুরোধ করিয়াছে। নীরেনকে আরও দুইবার বাজীতে নিমন্ত্ৰণ করিয়াছিল--ছেলেটিকে তাহার অত্যািপ্ত পছন্দ হুইয়াছে। হরিহর তাহাকে অনেকবার বুঝাইয়াছে নীরেনের পিতা বড়লোক-তােহাঁদের ঘবে তিনি কি আর পুত্রের বিবাহ দিবেন ? সৰ্ব্বজয়া কিন্তু আশা ছাড়ে নাই, তাহায় মনের মধ্যে কোথায় যেন সাহস পাইয়াছে’-এ বিবাহেৱ ৰোগাযোগ যেন ফুয়াশা নয়, ইহা ঘটিৰে । হরিহর মনে মনে বিশ্বাস না করিলেও খ্রীর অনুরোধে অন্নদা স্নায়কে কয়েকৰায় তাগিদ দিয়াছিল বটে। কিন্তু এখন যে বড় বিপদ ঘটিল! -