পথেৰ পাঁচালী সৰ্ব্বজয়া খুশির সহিত পুলিটা তুলিযা ঘরে লইযা গেল । খানিকক্ষণ পরে অপু সুনীলদের বাড়ী গেল। উহাদের ঘরের রোযাকে পা দিব্যাহ শুনিল, সুনীলোয় মা সুনীলকে বলিতেছেন-ওসব কেন ব’য়ে আনলি বাড়ীতে ? কে আনতে বলেচে তোঁকে ? সুনীলও সকলের দেখাদেখি ছাদ বঁধিষাছিল, বলিল-কেন মা সবাই তো নিলেঅপুণ্ড তো এনেচে । জনীলের মা বলিলেন-অপু আনবে না কেন-ও ফলারে বামুনের ছেলে । ও এর পর ঠাকুর-পূজো ক’রে আয় ট্র্যাদা বেঁধে বেড়াবে,--শুই ওদের ধারা। ওর মা-টাও অমনি জ্ঞাংলা । ঐজিঙ্গে আমি তখন তোমাদের নিষে এ গায়ে আসতে চাইনি। কুসঙ্গে পড়ে যত কুশিক্ষে হচ্ছে। যা, ও সব অপুকে ডেকে দিযে আয-যা , না হয ফেলে দিগে যা । নেমন্থয় করেচে। নেমস্তেন্ন খেলি-ছোটলোকের মত ও সব বেঁধে আনবার দরকার কি । অপু ভষ পাইযা আর সুনীলদের ঘরে ঢুকিল না। বাড়ী ফিরিতে ফিরিতে ভাবিল-যাহা তাহার মা পাইয়া এত খুশি হইল, জ্যেঠাইমা তাহ দেখিযাই এত রাগিল কেন ? খাবারগুলো কি ঢেলামাটি যে, সেগুলো ফেলিয়া দিতে হইবে ? তাহার মা ফাংলা ? কে ফলারে বামুনের ছেলে ? বা রে, জ্যোঠামা যেন অনেক পানতুযা-গজা খাইয়াছে, তাহার মা তো ও সব কিছুই থাইতে পায় না। আয় সেই বা নিজে এ সব ক’দিন খাইযাছে ? সুনীলের কাছে যাহা অন্যায, তাহার কাছে সেটা বেমন করিষা অনুষ্ঠাষ হইতে পায়ে । লেখাপড় বড় একটা তাহার হয না, সে এই সবই করিয়া বেড়ায । ফলার খাওয, ছাদা বঁধা, বাপের সঙ্গে শিয়াবাজী যাওযা, মাছধরা। সেই ছোট্ট ছেলে পটু-জেলেপাড়ায্য কড়ি খেলিতে গিয যে সে-বায় মারা খাই যাছিল-সে এ সব বিষধে অপুৱা সঙ্গী। আজকাল সে আরও বড় হুইযাছে, মাথাতে লম্বা হইযাছে, সব সময অপুর্দার সঙ্গে সঙ্গে ঘাৱে। ওপাড়া হইতে এপাড়ায় আসে। শুধু অপুৰ্ব্বার সঙ্গে খেলিতে, আর কাহারও সঙ্গে সে বড় একটা মেশো না। তাহাকে বঁাচাইতে গিষা অপুদা যে জেলেৰ ছেলেদের হাতে মার খাহুধাছিল, সেকথা সে এখনো det fi | মাছ ধরিবার শখ অপুব অত্যন্ত বেশী। সোনাডাঙা মাঠের নীচে ইছামতীর ধারে কঁচি কাটা খালের মুখে খুব মাছ ওঠে। প্রায়ই সে এইখানটি গিষা নদীতীরে একটা বন্ড ছাতিম গাছের তলায় মাছ ধৰিতে বলে। স্থানটি তাহারা ভারি ভাল লাগে, একবারে নির্জন, দুধারে নদীয় পান্ডে কত কি গাছপালা নদীর জলে ঝুকিয়া পড়িযছে, ওপারে ঘন সবুজ উলুৱনি, মাঝে মাঝে লতা দোলানো কদম শিমুল গাছ, বেগুনী রংএর বনকলমী ফুলে ছাওযা কোপ, দূরে মাধব পুর গ্রামের বঁাশবন, পাখীয়া তাকে বনের ছায়ায, উলুবনের শ্যামলতাষ মেশামেশি মাখামাখি छि दिनट । সেই ছেলেবেলায় প্ৰথম ফুঠীর মাঠে আসার দিনটি হইতে এই মাঠ-বন-নদীর কি মোহ যে তাহাকে পাইযা বসিয়াছে। ছিপ ফেলিবা ছাতিম গাছের ছাযায় বলিয়া চারিদিকে
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/২২৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।