Slje ছৰি একে আমাদের সামনে ধ’রে দিয়েছেন, সে ছবি আঁর সহানুভূতিতে আর ণ্ঠার সহজস্বীকৃত সত্যদৃষ্টিতে আমাদের কাছে অপূর্ব লাগে । “আরণ্যক” বইখানি বাস্তবিকই একটি কাব্য, যে কাব্যে আমরা পাই একদিকে প্ৰকৃতি আর পৃথিবী, তার সঙ্গে-সঙ্গে মানুষ আর তার সমাজ ; যে ছবি তার নিজের জান আর অভিজ্ঞতা নিয়ে, আর গ্ৰীতি আর সাহাঙ্গভূতি দিয়ে গ্রন্থাকায় রচনা ক’রেছেন, সেটি আমাদের সকলেরই মন হাঙ্কণ করে । বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙলা সাহিত্যে সুপরিচিত—তিনি দক্ষিণ-বাঙলার নদীমাতৃক দেশের গ্রামা-জীবনের যে পরিচয় তঁর লেখায় দিযেছেন, সেটি আমাদের ঘরোয় কথা, দৈনন্দিন অনুভূতির অভিজ্ঞতার কথা ব’লে আমাদেয় এত ভাল লাগে । বাঙলা দেশের গ্রামের এই প্ৰাকৃতিক আবেষ্টনী, যার বর্ণনায় বিভূতিভূষণ যেন আত্মহাবা হ’য়ে যেতেন, সে আবেষ্টনীর হরিৎসস্থার আমাদের এই দেশে প্রকৃতি দেবী যেমন তীয় অজস্র এবং অকৃপণ। তাতে আমাদের পরিবেশন ক’রে দিয়েছেন, তেমনি তঁর হাতের দান বর্ণে গন্ধে শোভা সৌন্দর্ঘ্যে বহুমুখী এবং মহীয়ান। প্রকৃতিকে ভালবাসে এমন মানুষেব সংখ্যা একালে কম নম্ব-কারণ এখন মানুষের নাগরিক সভােতা চারদিক থেকে মাতা ধবিীব স্বকীম সৌন্দৰ্য্য-সমৃদ্ধিব উপব আক্রমণ চালাচ্ছে, আর এর ফলে, পৃথিবীর বৃক্ষ মার অরণ্য, ক্ষেত্র আর পর্বত, নদনদী আর বনানীর মধ্যে যে শুদ্ধ সৌন্দৰ্য্য-বোধের অধিষ্ঠান ছিল, তাৰ সঙ্গে আমবা আমাদেব প্ৰাণের ঘনিষ্ঠ যোগ হারিয়ে ফেলছি। এখনকার নাগরিক মাম্বািধ প্রকৃতিব সৌন্দর্ঘ্যের মধ্যে কখনও কখনও অবগাহন ক’রতে চায় এইজন্যে যে, বড়-বড় শহরের দম-বন্ধ-কবা আবহাওয়া থেকে আমরা একটি উস্কার পেতে চাট । আধুনিক মানুষের মনেল আকাঙ্ক্লাব মধ্যে এটি একটি সাধারণ আর সহজেই বোঝবার ম৩ান আকাঙ্ক্ষা । কিন্তু এ ছাড়া, বিভূতিভূষণের লেখায, কথাব্য বুঝিয়ে-বলা যায়-নয় এমন একটা জিনিস আছে যেটা আমাদের মনের গভীবে গিযে পৌঁছয়, আমাদের জাগিযে তোলে, আর আমাদের মনের অবচেতনায় আদিম যুগ থেকে যে প্রকৃতির সঙ্গে সাযুজে, 2 একটা অব্যক্ত আকাঙ্ক্ষা আছে সেইটে আবার যেন জীইয়ে তোলে। বিভূতিভূষণ কেবল যে গাছপালা, ফলফুল কন্দমূল আৰু তার সঙ্গে-সঙ্গে আরণ্য পশুপক্ষীর জীবন ভালবাসতেন তা নয়, তিনি এই জীবন ভালবাসতেন ব’লেই ভালবাসার-চোখে তায় সম্বন্ধে খুঁটিনাটি খবর নিতেন, সহজভাবে সে-সবের সম্বন্ধে অনেক তথ্য তিনি নিজের ভাণ্ডাবে সংগ্রহ কৰে ৰাখতেন । তঁাব এই সংগ্ৰহ আর আনুষঙ্গিক অনুশীলন, পেশাদার বন-বিজ্ঞানীর কাচি আশ্ব অনুবীক্ষণ নিয়ে প্রকৃতির এই দিকটিকে অর্থাৎ উদ্ভিদবিজ্ঞানকে হাতের মুঠোয় আনলুম, এইরকম মনোভাব থেকে উদ্ভুত নম্ব। তিনি একজন সাধারণ, আত্মভোলা অথচ সব বিষয়ে নজর আছে এমন চৌকস মানুষ ছিলেন, প্ৰকৃতি আর মানুষ সম্বন্ধে যার দৃষ্টি সন্ধানী আলোবি কাজ করত। এই মানুষটির কাছে পত্রপল্লব ফলপুষ্প বৃক্ষলতা এসবের নিজের একটা বাণী বা বক্তবা যেন ছিল, এবং এই-সমস্তেৰ প্ৰত্যেকটির নাম ও বৈশিষ্ট্য তিনি যেন নিজে থেকেই খুঁজে জেনে নিতেন । আর সেই সঙ্গে তার চোখের সামনে চলাফেরা ক’য়ছে এমন মানুষকেও শ্ৰীতি আর বিষয়ের চোখেও - তিনি দেখতেন। বনজঙ্গল
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/৩০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।