6- $ዓዊ ঘুরতে হয়েছিল। শচীশের মুখে শুনেছিলুম, উমারাণীর পশ্চিমে যাওয়া হয়নি। কি কারণে তার বাবা তাকে নিতে আসতে পারেননি। শচীশ মাঝে মাঝে বলত-দাদা, ঘাবার আগে একবার দিদির সঙ্গে দেখা ক’য়ে যাবেন । তিনি আপনায় কথা প্রায়ই বলেন। ইচ্ছা থাকলেও গৌহাটি যাবার আগে উষারাণীর সঙ্গে দেখা করা আর আমার ঘটে vestfà i গৌহাটি গিয়ে এবার অনেক দিন রইলুম। উমারাণীর কথা প্ৰথম প্ৰথম আমার খুব মনে হ’ত, তারপর দিনকতক পরে তেমন বিশেষ করে আয় মনে হ’ত না, ক্রমে প্ৰায় ভুলেই গেলুম। কিছুদিন পয়ে গৌহাটির চাকরি ছেড়ে দিলুম। শিলচর, দাজিলিং নানা চা-বাগান বেড়ালুম। দু’একটা হাসপাতালেও কাজ করলুম। সব সময় নির্জনে কাটাতুম। এক বাংলোয় থেকে থেকে কেমন হয়েছিল, অনেক লোকের ভিড়, অনেক লোকের একসঙ্গে কথাবাৰ্ত্ত লহ করতে পারতুম না। এখানে সন্ধ্যায় পাহাড়ের দেওয়ালের গায়ে ফুহুম ছড়ানো সূৰ্য্যান্ত, চা কোপের চারিপাশ ঘেরা গোধূলির অন্ধকার, গভীর রাত্রির একটা গুৰু গম্ভীর ভাব, আর সরল গাছের ডালপালার মধ্যে বাতাসের বিচিত্র সুর, ওই আমার কাছে বড় প্রিয়, বড় স্বঞ্চিকর ব’লে মনে হ’ত । বসবার ঘরটিতে সাজিয়ে রেখেছিলুম জগতের যুগ যুগের জানবীরদের বই Gauss, Zollner, Helmholtz, Geikie, Logan, Dawson, šjo orto-ortoto প্ৰতিভা আমাদের সুন্দরী বসুন্ধয়ার অতীত শৈশবেয়, তার রহস্যময় বালিকা-জীবনের তমসাচ্ছন্ন ইতিহাসের পাতা আলোকোজ্জল ক’রে তুলেছে, ধাদের মনীষায় যোগদূষ্ট অসীম শূন্যের দূরত। ভেদ ক’রে বিশাল নক্ষত্র জগতের তত্ত্ব অবগত হচ্ছে, তাদের সঙ্গে অনেক রাত পৰ্য্যন্ত কাটাতুম। জগতের রহস্যভরা অন্ধিসন্ধি তাদেরই প্ৰতিভাৱ তীব্র সার্চ-লাইট-পাতে উজ্জল হয়ে তবে তা আমাদের মত সাধারণ মানুষের দৃষ্টির সীমার মধ্যে আসছে। এই রকম প্রায় সাত আট বছর পরে আবার কলকাতায় গেলুম। ভাবলুম কলকাতাতেই প্ৰrাকাটিল আৱম্ভ করব। মামার বাড়ী গিয়ে উঠলুম। শুনলুম সামনের বাড়ীটায় আমার ভগ্নীপতিয়া আর থাকে না, তারা বছয় পাঁচ ছয় হ’ল দেশে চলে গিয়েছে। কয়েক মাস কলকাতায় কাটল। প্র্যাকটিস যে খুব জমে উঠেছিল, এমন নয়, বা অদূর ভবিষ্যতেও যে খুব জমে উঠবে, এরকম মনে করবার কোন কারণও দেখতে পাচ্ছিলুম না। এমন অবস্থায় একদিন সকালে মামার বাড়ীর ওপরের ঘরে বসে পড়ছি, এমন সময় কে ঘরে ঢুকল। চেয়ে দেখে প্রথমটা যেন চিনতে পারলুম না। তারপর চিনলুম-টুনি । অনেকদিন তাকে দেখিনি, তায় চেহারা খুব বদলে গিয়েছে। আমি তাকে হঠাৎ দেখে। যেমন আশ্চৰ্য্যও হলুম, তেমনি খুব আনন্দিতও হলুম। টুনি বললে, সে তার স্বামীর সঙ্গে আজ পাঁচ ছ'দিন হ’ল কলকাতায় এসেছে, সিলেতে তাদের কোন আত্মীয়ের বাষ্ঠীতে এসে আছে, আজ বাষ্ঠীয় সকলের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। অন্যাঙ্গ কথাবাৰ্ত্তার পর তাকে জিজ্ঞাসা করলুম-সুরেন এখন কোথায় ? টুনি বললো-ছোড়া এখন আবাদে কোথায় চাকরি করেন, সেখানেই থাকেন। f.脅ー〉ー*
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।