পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/৫০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী Cugel Greg|Vs fictics কিন্তু পরদিন ডাকঘর থেকে বুকপোস্ট নিয়ে খুলে দেখি যে, আমার রচনাই বটে, কিন্তু তার সঙ্গে পত্রিকার সহকারী সম্পাদকের একটি চিঠি । তাতে লেখা আছে, রচনাটি তারা মনোনীত করেচেন, তবে সামান্য একটু-আধটু অদল-বদলের জন্তে ফেরত পাঠানো হল, সেটুকু করে আমি যেন লেখাটি তাদের ফেরত পাঠাই, সামনের মাসে ওটা ছাপা হবে। অপূৰ্ব আনন্দ আর দিগ্বিজয়ীর গর্ব নিয়ে ডাকঘর থেকে ফিরি। সগৰ্ব্বে নিয়ে গিয়ে চিঠিখানা দেখাতেই সবাই বললেন- “কাঙ্ক সঙ্গে আপনার আলাপ আছে বুকি ওখানে ?-- আজকাল আলাপ না থাকলে কিছু হবার জোঁ-টি নেই। সব খোেশামোদ, জানেনই তো ?” তাদের আমি কিছুতেই বোঝাতে পারলাম না, যার হাতে লেখা দিয়ে এসেছিলাম, তার নাম পৰ্য্যস্ত আমার জানা নেই। তার পর সে গ্রামের এমন কোনও লোক রইল না, যে আমার চিঠিখানা না একবার দেখলে। কায়ও সঙ্গে দেখা হলে পথে তাকে আটকাই এবং সম্পূর্ণ অকারণে চিঠিখানা আমার পকেট থেকে বেরিষে আসে এবং বিপন্ন মুখে তাকে বলি-তাই তো; ওরা আবার একখানা চিঠি দিয়েচে, একটা লেখা চায়- সময়ই বা তেমন কই । -হায়! সে সব লেখকজীবনের প্রথম দিনগুলি ! সে আনন্দ, সে উৎসাহ, ছাপায় অক্ষরে নিজেয় নাম দেখায় বিস্ময় আজও স্মরণে আছে, কুলি নি। নিজেকে প্ৰকাশ করার মধ্যে যে গৌরব এবং আত্মপ্ৰসাদ নিহিত, লেখকজীবনের বড় পুরস্কার সবচেয়ে তাই-ই। স্বচ্ছ সরল ভাবানুভুতির যে বাণীরূপ কবি ও কথাশিল্পী তার রচনার মধ্যে নিয়ে যান।--তা। সার্থক হয় তখনই, যখন পাঠক সেই ভাব নিজের মধ্যে অনুভব করেন। এইজন্য লেখক ও পাঠকের সৃহানুভূতি ভিন্ন কখনও কোন রচনাই সার্থকতা লাভ করতে পারে না । বালক-কবির নিকট আমি কৃতজ্ঞ । সে-ই একরকম জোর করে আমাকে সাহিত্যরচনার ক্ষেত্ৰে নামিয়েছিল । পাচুগোপালের সঙ্গে মাঝে দেখা হয়েছিল। সে এখন চব্বিশ পরগণার কাছে কি একটা গ্রামের উচ্চ প্ৰাথমিক পাঠশালাব হেডমাস্টার ৷ এখনও সে কবিতা লেখে।