বিভূতিভূষণ
[ জন্ম-২৮ ভাদ্র, ১৩০১: মৃত্যু—১৫ কার্তিক, ১৩৫৭ ]
‘পথের পাঁচালী’র অমর লেখক ‘অপু’র স্রষ্টা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কাঁচরাপাড়ার সন্নিকটে ঘোষপাড়া-মুরাতিপুর গ্রামে মাতুলালয়ে ২৮ ভাদ্র, ১৩০১ (ইং ১২ লেপ্টেম্বর ১৮৯৪) বুধবার বেলা সাড়ে দশটায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতার নাম মৃণালিনী দেবী। মৃণালিনী বিভূতিভূষণের পিতার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ছিলেন। বিভূতিভূষণের জন্ম সমন্ধে তাহার পিতার খাতায় স্ব-হস্ত লিখিত যে বিবরণ আছে তাহা এইরপ:
জন্ম পত্রিকা
বিভূতিভূষণের পৈতৃক নিবাস ছিল যশোহব জেলার বনগ্রাম মহকুমার বারাকপুর গ্রামে। গত ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের সময় “র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ” অনুসারে বনগ্রাম মহকুমার বনগ্রাম ও গাইঘাটা অংশ ভারত ইউনিয়নের ভাগে পড়িয়াছে এবং বনগ্রাম মহকুমা পুনর্গঠিত হইয়া চব্বিশ পরগণা জেলার অন্তর্ভুক্ত ইয়াছে।
বিভূতিভূষণেব পিতামহ তারিণীচরণ যৌবনে কবিরাজী করিবার জন্য চব্বিশ পরগণা জেলার বসিরহাট মহকুমার পানিতব গ্রাম হইতে বারাকপুর গ্রামে আসেন। বারাকপুর এবং তৎ পার্শ্ববর্তী অঞ্চল তখন নীল ব্যবসায়ের জন্য খুব বর্ধিষ্ণু। তারিণীচরণ উক্ত গ্রামেই থাকিয়া যান এবং কালে বারাকপুর গ্রামের বাসিন্দা বলিয়া পরিগণিত হন।
তারিণীচরণের পুত্র মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যাষ শাস্ত্রীই বিভূতিভূষণের পিতা। মহানন্দ বারাকপুর এবং তৎপাশ্ববর্তী অঞ্চলের একজন খ্যাতিমান সংস্কৃত পণ্ডিত ও কথক বলিয়া পরিচিত ছিলেন। তিনি যৌবনে সংস্কৃত শিখিতে কাশীধাম যান এবং সমগ্র উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ভ্রমণ করেন। তিনি আজমীর, গোয়ালিয়র এবং পেশোয়ার পর্যন্ত গিয়াছিলেন বলিয়া জানা যায়। তাহার কণ্ঠস্বর ছিল উদাত্ত ও সুমিষ্ট এবং তিনি সে-যুগের বিখ্যাত কথক উদ্ধব শিরোমণিযর শিষ্য ছিলেন। তিনি কবিরাজীও কিছুটা জানিতেন। কোনো কোনো জীবনীলেখক বিভূতিভূষণের পিতাকে গ্রাম্য পুরোহিত ৰলিয়া তাহাদের গ্রন্থে বর্ণনা করিয়াছেন।
বি. র—১ ভূমিকা (১)