পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আদর্শ হিন্দু-হোটেল ৭৩ রাধিতে রাধিতে হঠাৎ তাহার মনে পড়িল কুসুমের কথা । কুস্বমও তাহাকে সেদিন গোয়ালঘরেই রাধিবার আয়োজন করিয়া দিয়াছিল—কুসুমও গোয়ালার মেয়ে । বোধ হয় সেই জন্তই—ইহার গোয়ালা শুনিয়াই— হাজারি ইহাদের বাড়ী আসিয়াছিল— মনের মধ্যের কোন গোপন আকর্ষণ তাহাকে এখানে টানিয়; আনিয়াছিল। হঠাৎ সে আশ্চৰ্য্য হইয়া গোয়ালঘরের দরজার দিকে চাহিল । একটি অল্পবয়সী বোঁ আধঘোমটা দিয়া গোয়ালঘরে ঢুকিয়া এক চুবড়ি শাক লইয়া লাজুক ভাবে দাড়াইয়া ইতস্তত: করিতেছে। শাকগুলি সদ্য জল হইতে ধুইয়া আনা-চুবড়ি দিয়া জল ঝরিয়া গোয়ালঘরের মাটির মেঝে ভিজাইয়া দিতেছে । হাজারি ব্যস্ত হইয়া বলিল—এস ম। এস—কি ওতে ? বউটি লাজুক মুখে একটু হাসিয়া বলিল–চাপানটে শক । এখানে রাখি ? বউটি কুস্কমের অপেক্ষাও বয়সে ছোট । হঠাৎ একটা অকারণ স্নেহে হাজারির মন ভরিয়া উঠিল । সে বলিল—াথো মা রাখো— খানিকট পরে বউটি আবার ঘরের মধ্যে গোটাকতক কাঠাল-বাচি লইয়া ঢুকিল। এবার সে যেন অনেকটা নিঃসঙ্কোচ, পিতার বয়সী এই শাস্ত, প্রৌঢ় ব্রাহ্মণের নিকট সঙ্কোচ করিতে তাহার বাধিতেছিল হয়তো । হাজারিকে বলিল—কাঠাল-বীচি খান ? —খাই মা, কিন্তু ওগুলো কুটে দেবে ? আমি ভাল চড়িয়েচি, আবার কুটি কখন ? বউটি এক পাথরের বাটিতে কাঠাল-বাঁচি আনিয়াছিল। বাটিটLনামাইয়া ছুটিয়া গিয়া একথান। বঁটি লইয়া আসিল এবং বীচিগুলি কুটিতে আরম্ভ করিল । হাজারির মন তৃষিত ছিল, ইহারা সবাই মেয়ের মত, সবাই ভালবাসে, সেবা করে, মনের দুঃখ বোঝে । হাজারি কোন কথা বলিবার আগেই বউটি বলিল—আপনার গায়ে আমি কত গিইচি । হাজারি অবাক হইয়া বলিল—আমার গা কোথায় তুমি কি ক’রে জানলে ? তুমি সেখানে কি ক’রে গেলে ? —গঙ্গাধর ঘোষ আমার পিসেমশাই— —ওহে!—তুমি জীবনের ভাইঝি! তা হলে কুস্কমকে তো চেনে— —কুস্বমদিদিকে তার বিয়ের আগে অনেকবার দেখেচি, বিয়ের পরে আর কণনও দেখি নি। সে আজকাল কোথায় থাকে জানেন নাকি ? —সে থাকে রাণাঘাটে শ্বশুরবাড়ীতে । . তবে তোমাকে মা বলে খুব ভাল করেচি, কুসুম আমার মেয়ে ! বউটি বীচি কোটা বন্ধ রাখিয়া গলায় আঁচল জড়াইয়া দূর হইতেই প্রণাম করিল। —এসে মা চিরজীবী হও, সাবিত্রী সমান হও । বউটি হাসিয়া বলিল-আপনি ধখন উঠোনে দাড়িয়ে, তখনই আপনাকে দেখে अॉभि