পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার Հօձ তখন স্কুলের মাস্টার ছিল না, উহারা পাস করিয়া বাহির হইয়া যাইবার অনেক পরে লে আসিয়া চাকুরিতে ঢোকে। চা পান শেষ করিয়া বিপিন জয়কৃঞ্চকে ডাকিয়া ঘরের বাহিরে লইয়া গিয়া মানীর কথা তাহাকে বলিতে লাগিল। বেশ সবিস্তারেই বলিতে লাগিল । বিশ্বেশ্বর চক্রবর্তী একটু দূরে বলিয়া উৎকর্ণ হইয়া ইহাদের কথা শুনিবার চেষ্টা করিতেছে দেখিয়া বিপিন গলার স্বর আরও একটু নীচু করিল। বিশ্বেশ্বর দাত বাহির করিয়া হাসিয়া বলিল, আমরা কি শুনতে পাব না কথাটা, ও বিপিনবাৰু ? —এ আমাদের একটা প্রাইভেট কথা হচ্ছে । —প্রাইভেট আর কি। কোন মেয়েমানুষের কথা তো ? বলুন না, একটু শুনি । বিশ্বেশ্বর অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে কথাগুলি বলিল দেখিয়া বিপিন একটু মজা করিবার জন্ত কহিল, আস্কন না এদিকে, বলছি। তারপর সে এক কাল্পনিক মেয়ের সঙ্গে তাহার কাল্পনিক প্রেম-কাহিনী সবিস্তারে শুরু করিল। একবার ট্রেনে একটি মুন্দরী মেয়ের সঙ্গে তাহার আলাপ হয় । মেয়েটির নাম বিজলী । তাহার বাবা ও মায়ের সঙ্গে সে কলকাতায় মামার বাসায় যাইতেছিল। বিজলী কলিকাতায় মামার বাসার ঠিকানা দিয়া তাহাকে যাইতে বলে। বিপিন অনেকবার সেখানে গিয়াছিল, বিজলী কি আদরষত্ব করিত ! বার বার অসিতে বলিত। একদিন বিপিন তাহার বাপ-মাকে বলিয়া বিজলীকে আলিপুর চিড়িয়াখানা দেখাইতে লইয়া যায় । সেখানে বিজলী মুখ ফুটিয়া বলে, বিপিনকে সে ভালবাসে । বিশ্বেশ্বর সাগ্রহে বলিল, এ কতদিনের কথা ? —তা ধরুন না কেন, বছর ছ-সাত আগের ব্যাপার হবে । —এখন সে মেয়েটি কোথায় ? —এখন তার বিয়ে হয়ে গেছে। শ্বশুরবাড়ী থাকে । —আপনার সঙ্গে আলাপ আছে ? —আলাপ আবার নেই! দেখা হয় মাঝে মাঝে তার সেই মামার বাসায়, তখন ভারী स्वर्ुप्रै कुद्ध । —কি রকম ধতু করে ? —এই গল্পগুজব করে, উঠতে দেয় না, বলে, বম্বন বন্ধন। খুব খাওয়ায় । এর নাম যত্ন আর কি। আমায় কত চিঠি লিখেছে লুকিয়ে। —বলেন কি ! চিঠিপত্র লিখেছে ! বিশ্বেশ্বর চক্রবর্তী একেবারে অভিভূত হইয়া পড়িল। ইহা সে কল্পনাও করিতে পারে না। মেয়েমহিষ লুকাইয়া যে চিঠি লেখে—সে চিঠি ষে পায়, তাহার কি সৌভাগ্য না জানি । বিশ্বেশ্বর চক্রবর্তীর অত্যন্ত ইচ্ছা হইল, সেসব চিঠিতে কি লেখা আছে জিজ্ঞাসা করে ; কিন্তু