পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম পরিচ্ছেদ Y যেদিন বিপিন বাড়ী যাইবার ঠিক করিয়াছে, সেদিন সকালে দত্ত মহাশয়ের মেয়ে শাস্তি তাহাকে চওঁীমণ্ডপে জলখাবার দিতে আসিল । একখানা কঁাসিতে চালভাজা ও নারিকেলকোরা, ইহাই জলখাবার। চা ইহারা বাধা নিয়মে থায় না, কচিৎ কখনো সর্দি কাশি হইলে ঔষধ হিসাবে খাইয়া থাকে। সুতরাং মেয়েটি যখন জলখাবারের কঁাসি নামাইয়া সলজ কুষ্ঠার সহিত বলিল, সে চা খাইবে কি না, বিপিন জিজ্ঞাসা করিল—চ হচ্চে ? মেয়েটি মুচুকণ্ঠে বলিল, যদি খান তো করে নিয়ে আসি । —না, শুধু আমার খাওয়ার জন্যে দরকার নেই। কেন দরকার নেই, নিয়ে আসচি। উত্তরের অপেক্ষা না করিয়াই নে চলিয়া গেল এবং কিছুক্ষণ পরে এক পেয়ালা ধূমায়িত গরম চা আনিয়া দিল। দত্ত মহাশয়ের মেয়ে তাহার সহিত এত কথা ইহার পূৰ্ব্বে কখনো বলে নাই, যদিও আর দু-একবার তাহাকে জলখাবার দিতে অসিয়াছিল। বিপিন ইহাদের বাড়ীর আৰকু কড়া বলিয়াই জানে। মেয়েটি চা দিয়া তখনও দাড়াইয়া আছে দেখিয়া বিপিন ভাবিল পেয়ালা লইয়া যাইবার জন্যই সে দাড়াইয়া আছে। তাহাকে ব্যগ্রভাবে গরম চায়ের পেয়ালায় প্রাণপণে চুমুকের পর চুমুক দিতে দেখিয়া মেয়েটি হঠাৎ হাসিয়া বলিল, অমন করে তাড়াতাড়ি অত গরম খাওয়ার দরকার কি ? আস্তে আস্তে খান— বিপিন কথা বলিবার জন্যই বলিল, তুমি আর কত দিন আছ ? –এ মাসটা আছি । -૭ ! —আপনি নাকি আজ বাড়ী যাবেন ? -ईT । —ক’দিন থাকবেন ? —দিন পনেরো হবে । মেয়েটি হঠাৎ বলিয়া ফেলিল—অত দিন ? পরক্ষণেই যেন কথাটা ও তাহার স্বরটা ঢাকিয়। ফেলিবার জন্য বলিল—রুগীপত্তরও তো আছে আবার এদিকে — —ম্বন্ধু ডাক্তার দেখবে আমার রুগী—একটা মোটে আছে। —বাড়ীতে কে কে আছেন ? —ম আছেন, আমার একটি বোন আর আমার স্ত্রী, ছেলেমেয়ে। —আপনার এখানে থাকতে খুব কষ্ট হয়, না ?