পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৪১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ꮼ$bz ৰিভূতি-রচনাবলী বনোজ কোলের কাছে তাহাকে টানিয়া লইয়া যাইত। আদর করিয়া বলিত, এই কথা! বেশ ত এসো | ای বলিয়া এমন দুষ্টুমিই করিতে আরম্ভ করিত যে বাধ্য হইয়া স্থলেখা বলিত, তোমার কেবল দুষ্টুমি, ছাড়ো । o বাঃ ! তোমার সাথেও দুষ্টুমি করতে পারবো না ? न1 ।। বেশ, বনোজও হাত পা ছড়াইয়া চুপ করিয়া নিৰ্ব্বিকার হইয়া বসিত। বেশ, না করলাম, বলিয়া বাশিটি হাতে তুলিয়া লইত। ধ। করিয়া স্বলেখা আবার তাহ কাড়িয়া হইয়। বলিত, না, এখন থাক বাজানো। বেশ না হয় দুষ্ট মিই কর, কিন্তু দেখ ত এই সন্ধ্যাবেলা—শেষে কে কি বলে বলবে! বনোজ আদর করিয়া তাহাকে কাছে টানিয়া লইয়া বলিত, কেউ কিছু বলবে না। এমনি কত কথাই তাহার মনে হইতে লাগিল, সে-সব কথা এতো ছোট, এতে ক্ষুদ্র যে কোনটিই মনে রাখিবার মতো নয়—তবুও প্রত্যেক কাহিনী, প্রত্যেকটি শব্দ, প্রত্যেকটি ছন যেন কতো চেনা, কতো পরিচিত। ভুলিতে চেষ্টা করিয়াও যেন ভোগা যায় না। স্থতির কোন অতল দেশ হইতে আপনিই উঠিয়া আসে। বসন্ত ঋতুতে যেমন করিয়া দক্ষিণের বাতাস সমস্ত কিছু তরাইয়া দিয় যায়, তেমনি করিয়া সেই সব গত কাহিনী মনের কোন গহবর হইতে উঠিয়া আসিয়া স্বরে ছন্দে, গানে এবং প্রাবলো, উত্তেজনায় আর আনন্দে তাহাকে মাতাইয়া দিয়া যায়, তাহাকে বিভোর করিয়া তোলে। সে আচ্ছন্ন হইয়া যায় সেই রূপের মোহে, সেই স্বরের ধ্বনিতে, সেই ছন্দের বিচিত্র বর্ণে এবং গন্ধে । ভুলিতে চাহিলেও ভোলা যায় না। এমন করিয়া কত কি স্বলেখা ভাবিতেছিল। নীচ হইতে মা ডাকিলেন, বৌমা ! বড় বেী ডাকিলেন, ও ছোট, কোথায় তুই ? নীচে আয় । স্থলেখা ডাক শুনিয়া নীচে আসিল। বড় বোঁ বলিলেন, তোমার জন্যেই খোকাটা অত বাড় বেড়েছে, এখন বোঝ মজাটা। একদিন তুমি না খাইয়ে দিলে চলবে না, ভাত নিয়ে কতক্ষণ সাধাসাধি হলো। খাবে না । স্থলেখা কোন কথা বলিল না, খোকাকে খাওয়াইয়া দিতে লাগিল। ইহাকে খাওয়ানো একটা মহাযুদ্ধ জয় করা হইতে কম নয়। এবং একমাত্র স্থলেখাই তাহা পারে। খাইতে বলিয়া অন্ততঃ সহস্র আবদার রক্ষা না করিলে সে কিছুতেই খাইবে না। স্থলেখা ইহা জানে, কিন্তু আজ তার কোন দিকে ভাল লাগিল না। বলিল, বুড়ো ছেলে এখনও নিজে খেতে শেখেনি, পারব না আমি তোকে রোজ খাওয়াতে, খা । স্বলেখ বুঝিতে পারিল আজ খোকার ভাল করিয়া পেট ভরে নাই। কিন্তু কোন কথা