পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবাগত —বলি আমার গরুডো কি এনেচ মাঠ থেকে ? —ধ্য, হ্যা। গোরু গোরু করেই ম’লে শেষকালডা । জর ছেড়েচে । —ছেড়েচে—ছেড়েচে । বলি গোরু কোথায় বেঁধে রাখলে ? —গোয়ালে গো গোয়ালে—ক্ষেপলে যে গোরু গোরু করে— কেরোসিন তেল একটা টেমিতে একটুখানি ছিল, জব ঠাকরুণ টেমিটা জালালেন। আমড়া গাছে একটা তেড়ে পার্থী আর একটা তেড়ো পার্থীর সঙ্গে কথাবাৰ্ত্তী কইচে। প্রব ঠাকরুণের জরতপ্ত মস্তিষ্কে মনে হ’ল পার্থী দুটো বলচে :– প্রথম। কুৎলি, কুৎলি→ দ্বিতীয়। ক্যা-কা-ক্যা— প্রথম। কুংলি, কুংলিदिउँौग्न । कँT-रॉअ|-कॅT প্রথম। কুংলি, কুংলি— দ্রব ঠাকরুণ বিরক্ত হয়ে উঠলেন। কি একঘেয়ে আওয়াজ রে বাপু চালাচ্চে তে। চালাচ্চেই, আধঘণ্টা হয়ে গেল—একে মাথা ধরে আছে, ভালো লাগে ? খাম্ না বাপু । মাছুষে জানোয়ারে সবাই মিলে পেছনে লাগলে কি করে বাচি— গোহালে গিয়ে দ্রব ঠাকরুণ মূলি গোরুকে দেখে প্রাণ ঠাও করলেন। মুংলি না খেলে র্তার খাওয়া হয় না, এই বনজঙ্গলে ঘেরা নির্জন স্বামীর ভিটে অঁাকড়ে পড়ে আছেন, সবাই ছেড়ে গিয়েচে তাকে, কতক স্বর্গে কতক বা বিদেশে। তার দুই ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি, নাৎনী—একম্বর, বড় গেরস্ত, যদি সবাই থাকতো আজ বজায়। কেউ নেই আজ। মুংলিকে নিয়ে তিনি এক পড়ে আছেন গোপীনাথপুরের ভিটেতে। তাই গোরুটাকে অত ভালবাসেন, মাঠে বেঁধে দিয়ে বার বার করে দেখে আসেন, নদীতে জল খাওয়াতে নিয়ে যান। সকালে উঠে প্রব ঠাকুরুণের মনে হ’ল খিদের চোটে তিনি দাড়াতে পারচেন না। वाणैौन्न পেছনে জঙ্গলের মধ্যে একটা ডুমুর গাছ থেকে ডুমুর পেড়ে আনলেন, দুটো সজনে শাক পাড়লেন উঠোনের গাছ থেকে। ঘাটের পথে মুখুজ্যে গিল্পীর সঙ্গে দেখা। মুখুজ্যে গিরীর ছেলে ক’টি লেখাপড়া শেখে নি, গাজা খেয়ে বেড়ায়—দ্রব ঠাকরুণের ক'টি নাতি চাকুরে, এজন্যে জব ঠাকরুণের প্রতি তার অন্তরে অন্তরে হিংসে বেশ। জিজ্ঞেস করলেন–জর হয়েছিল না কি শুনলাম খুড়ীমার ? —ধ্য মা, আজ দুটো ভাত রাধবো। তাই সকাল সকাল ঘাটে যাচ্চি— —আর মা, তোমার থাকতেও নেই-অমন সব নাতি নাখনী থাকতেও তোমার এই দুর্দশা—সবই কপাল । * অর্থাৎ, দুই চাকুরে মাতি আছে বলে তোমার ওমর করবার কিছু নেই। তুমি ৰে তিমিরে সেই তিমিরে।