পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবাগত YUፄ আপনার জন্যে । নিতাই দুবার স্টেশনে দেখে এল ট্রেন রাইট-টাইমে এসেচে। লেট এক মিনিটও ছিল না— —আজ্ঞে বড়বাবু, শরীরটা কাল বড়ই— —ও আপনার পুরানো কথ। ও কথ। আর শুনবে না আঞ্জ । যাক, ক্যাশ এনেচেন এখন ? কৃষ্ণলাল অপরাধীর মত বড়বাবুর মুখের দিকে চাহিল। বলিল –ক্যাশটা আনিগে ধাই— না—একটু মুশকিল হয়েচে, আচ্ছা আসি— —যান আম্বন— কৃষ্ণলাল তবুও দাড়াইয়া আছে দেখিয়৷ নৃত্যগোপালবাবু বলিলেন—কি হ’ল ! —আজ্ঞে ওবেলা দেবে। ওটা । বাসায় এনে রেখেছিলাম, চাবি দিয়ে বেরিয়ে গিয়েচে, আমি যার সঙ্গে থাকি । so —আপনি কোথায় গিয়েছিলেন ? — একটু বেড়াতে বার হয়েছিলাম ওই গোলদীঘির দিকে— - - সব বাজে কথা । আমি বিশ্বাস করিনে। কেন করিনে তাও আপনি জানেন । রাত দশটার পরেই ক্যাশ এনে দেওয়ার কথ। —আপনি বুড়ো হয়ে গেলেন এই ক্যানভাসারের কাজ ক’রে। জানেন না যে ক্যাশ তখুনি জমা দেওয়ার নিয়ম আছে ? —আজ্ঞে, আজ্ঞে— --এ রকম আরও কতবার হয়েচে বলুন দিকি ? আপনার কথার ওপর বিশ্বাস করা যায় না আর । বড়ই দুঃখের কথা । আপনি আমাদের পুরানো ক্যানভাসার ব’লে আপনার অনেক দোষ সহ করেচি আমর। কিন্তু এবার আর নয়। আপনি এ মাসের এই ক’দিনের মাইনে নিয়ে যাবেন আপিস খুললে— কমিশনের হিসেবটাও সেই সঙ্গে দেবেন। যান এখন । অবগু এত সহজে কৃষ্ণলাল যাইতে রাজি হয় নাই—নৃত্যগোপ্তালবাবুকে সে যথেষ্টই বলিয়াছিল, নিত্যগোপালবাবুর বুড়োকৰ্ত্তাকে গিয়া পৰ্য্যস্ত ধরিয়াছিল। শেষ পর্যন্ত दिछुट्टे श्ञ मी । মুশকিল এই, চাকুরী যখন খাইবার হয়, তখন তাহাকে কিছুতেই ধরয়া রাখা যায় না। মৃত্যুপথযাত্রী মানবের মতই তার গতিপথ নিৰ্ম্মম, ধরাবাধা ! স্বতরাং চাকুরী গেল। to 尊 তখন বেলা আড়াইট । সকাল হইতে ইহাকে উহাকে ধরাধরির ব্যাপারেই এতক্ষণ সময় কাটিয়াছে। স্নান-আহার হয় নাই। ২৫২ রামনারায়ণ মিত্রের লেনে ঢুকিয়াই যে টিনের চালওয়ালা লম্বা দোতলা মাটির ঘর, অর্থাৎ যে মাঠকোঠার ঠিক সামনেই আজকাল কর্পোরেশনের সাধারণ স্নানাগার নির্মিত হইয়াছে—তারই পশ্চিম কোণে সতেরো নম্বর ঘরে জাজ প্রায় এগারো বছর ধরিয়া কৃষ্ণলালের বাসা ।