পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী مراه با ফিরতে বড্ড দেরি হয়ে যাবে শাক তুলতে। নেীকো থেমে দাড়িয়ে জলের আবর্তে পাক খাচ্চে। নকুড় চকত্তি বল্পে—একটা বিড়ি খাওয়া যাক, কি বলে! হে ? আমার ওসব দিকে তত মন ছিল না। তবুও কলের পুতুলের মত ওর হাত থেকে ৰিড়ি নিয়ে ধরালুম। নকুড় চক্কত্তি জলের ধারের ধানগুলো সম্বন্ধে কি যেন বলচে। একবার সে বল্লে—যাক, একটা কাজের মত কাজ হয়েচে। ধানটা খুব জোর পাওয়া গিয়েচে । তুমি না গেলে হাকিম কি ধান দিত ? হাকিমের স্ত্রী তোমায় চেনে নাকি ? ও না থাকলে আজ ধান হ’ত, না ছাই হ’ত ! অামি অন্যমনস্কভাবে বল্লাম—হ্যা । গল্পে এমন ঘটনা অনেক পড়া গিয়েচে–কিন্তু বাস্তব জীবনে ক'টা ঘটে তাই ভাবচি। একটাও না, অথচ সদে পড়লে হয়তো মনে হবে, এমন গল্প অনেক পড়া গিয়েচে। জীবনের অলিখিত কাব্যে কত অধ্যায় কত ঘটনা—এর পাঠক কে, না যে সে জীবন যাপন করচে । বহির্দেশে দণ্ডায়মান বিরাট জনতা উৎসুক শ্রোতা হতে পারে, দর্শক হতে পারে কিন্তু রসিক সমঝদার মাত্র, তার বেশি নয় । বাগজোলার খালের মধ্যে দিয়ে জলের তোড় মাঠের দিক দিয়ে দু’ধারের ঘন বনের মধ্যে দিয়ে এসে নদীতে পড়চে । জলের তোড়ে একটা প্রকাও জগডুমুর গাছ শেকড় ছিড়ে জলে ঝুকে পড়ে আছে। নকুড় চকভি বল্লে—দ্যাথ তো বাবা সয়ারাম, গাছটাতে যদি কচি কচি ডুমুর পাওয়া যায়। নৌকোটা একটু থামিয়ে পাড় দিকি দু’টো—তরিতরকারির দাম, তবুও দু'টো ডুমুর নিয়ে গেলে কাজ হবে—ধানটা পেয়ে বডড স্থবিধে হয়েছে—কি বলে। রামলাল ? আমি বল্লাম—হঁ্যা । —তোমার আজ হয়েচে কি হে ? কোনদিকে যেন মন নেই— —যা হয়েচে তা হয়েচে, ধান পেয়েচ তো ? —৫—দশ টাকায় এক মণ ধান ; এ না পেলে তোমার আমার মত লোকের— নকুড় চক্কত্তির কথাটা আমার মনে লাগলো বটে কিন্তু কথাটা সত্যি, আমাদের মত অবস্থার লোকের কি অবস্থা হ’ত আজ যদি মুবিধে দুরের ধান পাওয়া না যেতো। অথচ আজ নকুড় চক্কত্তি নিজের নামের সঙ্গে আমার নামটা জড়ালে শুনে মনের মধ্যে খচ করে উঠলো কোথার । 氫* অনেকদিন আগের কথা। আমার পিসিমার বাড়ী বামুনহাটি থেকে ফিরে আসছিলাম। আমি কলেজ থেকে বেরিয়েচি চার পাঁচ বছর, কিন্তু তখনও কলকাতায় থাকি, ব্যবসাবাণিজ্যের দিকেই চিরকাল মন । এক মাড়োয়ারী ফাৰ্ম্মে কাজ শিখি। এগারো মাইল রাপ্ত। মেঠো পথ। হেঁটে আসতে আসতে কাপাসীপাড়ার হাটতলায় বাধানে পুকুরের চাতালে বসে একটু বিশ্রাম করচি এমন সময় খুব ব্যস্তসমস্ত অবস্থায় দু'টি লোককে আমার