পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৪২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হে অরণ্য কথা কও *-* the reach of science, and probably are for ever beyond the comprehension of the human mind.” —Sir James Jeans. “There can never be any real opposition between religion and science ; for the one is the complement of the other...It was not by accident that the greatest thinkers of all ages were deeply religious souls.” Max Planck. ওপরের কথাগুলো সমর্থন করে আমারই অনুভূতির, যে অহুভূতির কথা আমি এই ডায়েরীর নানা স্থানে নানা আকারে লিখেচি। সেই স্তব্ধ, চিন্ময় ভাবলোক যার সন্ধান মেলে নদীতীরে নেমে-আসা অপরাষ্ট্রের নির্জনতায়, বনঝোপে ফোটা বনকলমী ফুলের উদাস শোভায়, আধার নিশীথে মাথার ওপরকার জলজলে নক্ষত্র ছিটানো ছায়াপথের বিরাট ইঙ্গিতে । যে জীবনরহস্তের মূল উদ্ধাকাশে, শাখা প্রশাখা ধরণীর ধূলিতে । মিঃ সিন্‌হার মোটরে আমি ও কল্যাণী ধলভূমগড়ে হুটুর বাসায় এসে দেখি গুটুকে, মংলা ও গোপাল উপস্থিত । ওখানে বিকেলের দৃশ্বটি বেশ চমৎকার হয়েচে ; চ খেয়ে চলি আবার মোটরে, চাকুলিয়া থেকে বর্ষাক্ষাত বনের দৃপ্ত দেখতে দেখতে মান সমুড়িয়া হয়ে বহরাগড়া ডাকবাংলো পৌঁছে গেলুম। সেদিন কত রাত পৰ্য্যস্ত গল্প করি। পরদিন অর্থাৎ গতকাল খাড়া মোঁদা হয়ে বম্বে রোড দিয়ে দুধকুণ্ডী রিজার্ভ ফরেস্টের বাংলোতে। খড়ের ঘাটোয়ালি বাংলো, চারিধারে আম ও ফলবান বৃক্ষের কুঞ্জ । নিকটেই বন আরম্ভ হয়েচে, জানাল দিয়ে চোখে পড়চে—এতোয় বৃষ্টিস্নাত বনভূমি থেকে বন্ত শনের ফুল ও বন্য কলাফুলের মত কি ফুল নিয়ে এল। বৃষ্টি পড়চে—কল্যাণী রবীন্দ্রনাথের ‘মালঞ্চ পড়চে, আমি টেবিলে বসে ভাবচি, এ যেন আমার ক্রীত মৌজা, ওই বন আর এই ঘাটোয়ালি বাংলো যদি আমার থাকতো এমন নির্জন স্থানে তবে লিখবার কত স্থবিধাই না হোত। কতক্ষণ পরে মিঃ সিনহা বন তদারক করে ফিরে এলেন, আমরাও একটা বনের মধ্যে যেতে যেতে বনবিভাগের রোপিত বোনা গাছ ও শিশুগাছ দেখলাম । বিকেলে বাংলোতে বেড়াতে এলেন হেডমাস্টার মহাশয় । কাল এখানে মিটিং আছে । কি থৈ থৈ করচে space এখানে ডাকবাংলোর অস্ত আকাশের রং অতি অদ্ভুত। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দৃষ্ট সেই সন্ন্যাসীর আশ্রমে গিয়ে দেখি আশ্রমটা একেবারে ভেঙে পড়ে গিয়েচে, চালের খড় খসে পড়চে, আমরা সন্ধ্যার পরে আসবার সময় দুটি ছোকরাকে সেখানে দেখলুম—সেই অন্ধকারে ঘরের মধ্যে তারা কি ৰুরচে ? ওরা নাকি ওখানে আমোদ করতে এসেচে। এই ভাঙা বাড়ীতে এরা গল্প করে বসে। আমাদের তখনই মনে সন্দেহ হোল—পরে শুনলুম ওরা ওখানে বসে গাজা খায়। মৃদু জ্যোৎস্নালোকে কতক্ষণ সঁকোর ওপর বসে ভগবদ্বিষয়ে চর্চা করি। কত রাত পৰ্য্যস্ত গল্প করলুম বাংলোতে বসে ।