পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঢাকাই পরোটা অর্ডার দিয়া যদুবাৰু মহাখুশির সহিত আপন মনে উদরসাং করিড়েছেন, এমন সময় ফুটপাথ দিয়া প্রজ্ঞাত্রওকে যাইতে দেখিয়া ডাকিলেন, ও প্রজ্ঞা, ওরে শোন শোন— প্রজ্ঞাব্রত হকিখেলা দেখিয়া বাড়ী যাইতেছিল,উকি মারিয়া বলিল, স্তার, আপনি এখানে ? —শোন শোন, বোস। খাবি ? —ন স্তার, আপনি খান। —কেন, বোস না। আয় । এই বয়, দুখান চপ আর দুখান কাটলেট দা ও তো । প্রজ্ঞাব্রত দুই-একবার যুদ্ধ প্রতিবাদ করিয়া খাইতে বসিল। যদুবাৰু তাহাকেজোর করিয়া এটা-ওটা আরও খাওয়াইলেন। যাইবার সময়ে তাহাকে বলিলেন, একটা সিগারেট কিনে আন তো, এই নে পয়সা। - সিগারেট ধরানো হইলে দুইজনে কিছুক্ষণ ধৰ্ম্মতলা ধরিয়া চলিলেন। একটা গ্যাস-পোস্টের নীচে আসিয়া যদুবাবু বলিলেন, হ্যা রে, তুই চাদ দিয়েছিলি ? –কিসের স্তাৱ ? - –এই আজ জু’তে আসবার জন্যে । —ষ্ঠা স্তার, চার আনা । যদুবাবু একটা সিকি বাহির করিয়া প্রজ্ঞাত্রতের হাতে দিয়া বলিলেন, এই নে, নিয়ে যা—কাউকে বলিস নে— প্রজ্ঞাব্রত বিস্থিত হইয়া বলিল, ও কী স্তার ? জু দেখলাম, ট্রামে গেলাম, রুটি মাখন 13TFF 던R—তুই নিয়ে যা না। তোর অত কথার দরকার কী ? কাউকে বলবি নে। —না স্তার, আমি নেব না—নে বলচি, ফাজলামো করিস নে,—নিয়ে নে – প্রজ্ঞাব্রত আর দ্বিরুক্তি না করিয়া হাত পাতিয়া সিকিটি লইল । —আমার এই গলি স্তার, যাই আমি। - —চল না, আমায় একটু এগিয়ে দিবি । বেশ লাগে তোঁর সঙ্গে যেতে। প্রজ্ঞাত্ৰত অনিচ্ছার সহিত আরও কিছু দূরে গিয়া ওয়েলিংটন স্ট্রীটের মোড়ে আপিয়৷ বলিল, ধান স্তার, আমি আর যাব না— পরদিন যদুবাৰু হেডমাস্টারের কাছে আট টাকা দশ আনার এক বিল দাখিল করিয়া বিনীতভাবে জানাইলেন, দশ মানা বেশী খরচ হইয়া গিয়াছে—ট্রামভাড়া, ছেলেদের খাওয়ানো, আনুষঙ্গিক খরচ । হেডমাস্টার বলিলেন, ওয়েল, এই নাও দশ আন।। ছেলেরা কিন্তু ক্লাসে বলাবলি করিতে লাগিল, যদুবাৰু তাহদের কিছুই খাওয়ান নাই। হেডমাস্টার কত টাকা বন্ধুবাবুর হাতে দিয়াছেন, কেহ কেহ তাহাও অনুসন্ধান করিবার চেষ্টা করিতে ছাড়িল না।