পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘরে আড়ালে বলিলেন, ঢের ঢের থোশামুঙ্গে দেখেচি বাবা, কিন্তু এ দেখছি সকলের উপর টেঙ্কা দিলে—আবার বাড়ী থেকে বয়ে ভেড়ার ধাপনা এনেচে । ক্ষেত্রবাবু বলিলেন, বাড়ী থেকে না ছাই। আপনিও যেমন! ওর বাড়ীতে একেবারে দলে দলে ভেড়া চরচে ! ক্ষেপেছেন আপনি ওসব চাল দেখানে আমরা বুঝি নে ? মিউনিসিপ্যাল মার্কেট থেকে কিনে এনেছে মশাই। ছেলেরা ক্লাসে ক্লাসে প্রণাম করিল মাস্টারদের। আজ বেশী পড়াশুনা নাই, সকাল সকাল ছুটি হইয়া গেলে সকলে মিলিয়। পুরানো চায়ের দোকানে চা পান করিতে গেলেন। দোকানী তাহাদের দেখিয়া লাফাইয়া উঠিল : আন্ধন বাবুরা, আমুন—ভাল ছিলেন সব ? আজ স্কুল খুলল বুঝি ? ওরে, বাবুদের চা দে । আবার সেই পুরানো ঘরে বসিয়া বহুদিন পরে পুরোনো সঙ্গীদের সঙ্গে চা পান। সকলেরই খুব ভাল লাগে। যদুবাবু বলেন, নারাণদা, গল্প করুন সে দেশের ! —জারে রামো, সে আবার দেশ ! মোটে মন টেকে না। দুধ ম্বি খেতে পেলেই কি হল ! মানুষের মন নিয়ে হল ব্যাপার—মন যেখানে টেকে না, লে দেশ বাবার দেশ ! ক্ষেত্রবাবু বলিলেন, যা বলেচেন দাদা। গেলাম পৈতৃক বাড়ীতে। ভাবলাম, অনেক দিন পরে এলাম, বেশ থাকব । কিন্তু মশাই, ছুদিন যেতে না-যেতে দেখি আর সেখানে মন টিকচে না। —কলকাতার মতন জায়গা আর কোথাও নেই রে ভাই। —খুব সত্যি কথা । —মানুষের মুখ যেখানে দেখা যায়, ছুটে বন্ধুর সঙ্গে গল্প করে স্থখ যেখানে, খাই ন-খাই সেখানে পড়ে থাকি । নারাণবাৰু অনেকদিন পরে চুনিজের বাড়ী পড়াইতে গেলে । • চুনি দেওঘর না কোথায় গিয়াছিল, বেশ মোটালোটা ইয়া ফিরিয়াছে। অনেকদিন পরে চুনির সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়াতে নারাণবাবু বড় আনন্দ পাইলেন। চুনি আদিয়া প্রণাম করিল। নারাণবাবু প্রথম দিনটা তাহাকে পড়াইলেন না, বরিশালে যে গ্রামে গিয়াছিলেন সে গ্রামের গল্প করিলেন, পঞ্চানন মোক্তারের কথা বলিলেম। চুনি তাহার কাছে দেওঘরের গল্প করিল, - নারাশবাৰু বলিলেন, পান্না কোথায় রে ? —সে স্তাবু, মালীমার বাড়ী গিয়েছে কালীঘাটে কাল জাপবে। মালীমার বড় ছেলের পৈতে কিনা। —তুই যাস নি যে ? - —স্তা, আজ প্রথম দিনটা—আপনি আগৰেম । রাত্রে খাব।